ইসি’র বর্ষপূর্তি: এবারের চ্যালেঞ্জ জাতীয় নির্বাচন

নির্বাচন ভবনকে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এক বছর পূর্ণ হলো আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি)। ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচ সদস্যের এই কমিশন দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পাঁচ বছর মেয়াদি এই কমিশন দায়িত্বের প্রথম বছরে দুটি সিটি করপোরেশনসহ বেশ কিছু নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া করেছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও। বিদায়ী কমিশনের বন্ধ করে দেওয়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনেরও (ইভিএম) পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করেছে এই কমিশন। এজন্য প্রশংসাও কুড়িয়েছেন বর্তমান হুদা কমিশন। বছরের মাঝামাঝিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রোডম্যাপ প্রণয়ন করে সেই অনুযায়ী পথ চলতে শুরু করে এই কমিশন।

কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে কমিশন রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করে। তবে, কমিশন প্রথমদিকে রোডম্যাপে পথ চলতে শুরু করলেও মাঝপথে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। অনুষ্ঠিত সংলাপের প্রস্তাবনা গত ডিসেম্বরের মধ্যে তৈরি করার প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। একই সময়ের মধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণের গেজেট প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা আটকে গেছে।

কমিশন অবশ্য দাবি করেছে, তাদের সব প্রস্তুতি থাকলেও আইনি জটিলতায় তারা সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে পারছেন না। এদিকে চলতি মাসের মধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশসহ প্রয়োজনীয় আইন-কানুনগুলো সংস্কারের প্রতিশ্রুতি রোডম্যাপে বলা হলেও সেক্ষেত্রেও পিছিয়ে রয়েছে ইসি। এখনও আইনগুলোর খসড়াও সম্পন্ন হয়নি। সেক্ষেত্রে খসড়া করে তা মন্ত্রিসভায় পাস ও আইনে পরিণত করতে আরও সময়ের প্রয়োজন পড়বে। তবে,  চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ জাতীয় নির্বাচনের অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে কমিশন স্বাভাবিকভাবে পথ চলছে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগুচ্ছে তারা। রোডম্যাপে আরও গতি এনে একাদশ সংসদ নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে দেখতে চায় ইসি। সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা প্রমাণ করাই হবে ইসির বড় চ্যালেঞ্জ।

দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরে নিজেদের মূল্যায়ন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমরা সংবিধান, আইন ও বিবেক অনুযায়ী কাজ করছি। আমাদের কাজের মূল্যায়নের দায়িত্ব জনগণের।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ইঙ্গিত করে এই কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সামনে একটি বড় কাজ রয়েছে। সেটার লক্ষ্যে আমরা এগুচ্ছি। আমরা সংবিধান ও আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে যাবো।’

সীমানা পুনর্নির্ধারণে বিলম্বের কারণ সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্ত এই কমিশনার বলেন, ‘আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি রয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে সীমানা খসড়া উপস্থাপনে সময় লাগছে। আদালতের আদেশ পেলে আমি মাত্র একদিন সময় নেবো।’

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম সুপারিশ করেছিল সার্চ কমিটি। রাষ্ট্রপতি ওই ১০ জনের তালিকা থেকে পাঁচজনকে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন। তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।