প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি শুরুর আগে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রায় আট কিলোমিটার সড়কের বিভাজকে বাগানবিলাস ফুলগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সড়কগুলোর মধ্যে রয়েছে গোলাপশাহ মাজার থেকে কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড়, বঙ্গবাজার থেকে শেরাটন হোটেল, মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ মোড়, রমনা থানার সামনে থেকে সবজিবাগান এলাকা এবং মতিঝিলের বলাকা চত্বর এলাকা।
ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, ২০১৬ সালের জুনে ডিএসসিসির সড়কগুলো সবুজায়নের পাশাপাশি সৌন্দর্যমণ্ডিত করে তুলতে এক বছর মেয়াদি প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। এর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৭ সালের জুনে। উদ্দেশ্য ছিল, মেয়াদ শেষে সড়কগুলোতে ফুলের সৌন্দর্য শোভা পাবে, ছড়াবে সৌরভ। এতে সফলতা আসলে পরবর্তীতে সবকটি সড়কেই পর্যায়ক্রমে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটেছে ভিন্ন। ফুল ফোটা তো দূরের কথা, অধিকাংশ স্থানে গাছই বেঁচে থাকছে না। আবার কিছু গাছ বেঁচে থাকলেও বহু চেষ্টার পরেও তাতে ফুল ফোটানো যাচ্ছে না।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বিভাজকে বাগানবিলাস ফুলগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে এসব সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন করা হতো বেসরকারিভাবে। বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব দু-চারটি বিজ্ঞাপন প্রচার করতো। এতে সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি এ খাতে রাজস্ব ব্যয় থেকে মুক্তি পেতো সিটি করপোরেশন। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হয়ে নগর ভবনে আসার এক বছরের মাথায় এ সংক্রান্ত সব চুক্তি বাতিল করে এ প্রকল্প হাতে নেন ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
সড়ক বিভাজকের ফুলগাছ নিয়ে খবর প্রকাশেল পর আগের মতো বেসরকারিভাবে সৌন্দর্যবর্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি করপোরেশন। করপোরেশনের পক্ষ থেকে চিঠির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা, মোবাইল ফোন অপারেটর, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট ৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মো. বিলালের সভাপতিত্বে একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান অথবা উপযুক্ত ব্যক্তিকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, করপোরেশন এলাকায় অধিকতর সৌন্দর্যমণ্ডিত করার লক্ষ্যে সৃজনশীল ধ্যান-ধারণায় সড়ক মিডিয়ানগুলোর সৌন্দর্যবর্ধন কাজ আপনার প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বাংক, বীমা, টেলিকম অপারেটর, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ইত্যাদির মাধ্যমে করানোর বিষয়ে মেয়র অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। সে অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টা ৩০ মিনিটে নগর ভবনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর ভবনের সংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মূলত সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্পটিতে কোনও সফলতা না আসায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধন করবো। বিজয়টি জানিয়ে আমরা শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। তাদের উপস্থিতিতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নগর ভবনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’