১৭ বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত (ভিডিও)

 

তালিকানেপালের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালে ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্তের কথা জানানো হয়েছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তের পাঁচ দিন পর ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে এসব মরদেহ  উপস্থিত নিকট স্বজনদের দেখানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শনিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ওই হাসপাতালের মহারাজগঞ্জ ক্যাম্পাসের ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন-এর সামনে ফরেনসিক বিভাগের পক্ষ থেকে ১৪টি মরদেহের পরিচয় জানান হাসপাতালটির ফরেনসিক বিভাগের প্রধান প্রমোদ শ্রেষ্ঠা। এ সময় বাংলাদেশি মেডিক্যাল টিমের সদস্য ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। পরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আরও তিনজনের পরিচয় জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল টিমের সদস্য ডা. ইমাম হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ইন্সটিটিউট অব মেডিসিন-এর সামনে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মোট ২৮টি মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে ১৭ জন বাংলাদেশি, ১০ জন নেপালি ও একজন চীনা নাগরিক। নেপালি ও চীনা নাগরিকের মরদেহ স্বজনদের দেখানোর পর বাংলাদেশি নাগরিকদের মরদেহ দেখানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। পরে বাংলাদেশিদের মরদেহের তালিকা পরে শোনান ডা. সোহেল মাহমুদ।
এদিকে, দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। 

শনাক্ত করা মরদেহের তালিকা পড়ছেন ডা. সোহেল মাহমুদ

শনাক্ত হওয়া নিহত বাংলাদেশিরা হচ্ছেন: অনিরুদ্ধ জামান, তাহিরা তানভীন শশী, মিনহাজ বিন নাসির, রাকিবুল হাসান, মতিউর রহমান, রফিক উজ জামান, তামারা প্রিয়ংময়ী, আকতার বেগম, হাসান ইমাম, এসএম মাহমুদুর রহমান, বিলকিস আরা, বিমানটির পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশিদ ও কেবিন ক্রু খাজা সাইফুল্লাহ।

নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে শনিবার স্থানীয় সময় পৌনে সাতটায় জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৭ বাংলাদেশির মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। আগের ১৪ জন ছাড়াও আরও তিনটি লাশ শনাক্তের কথা নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন আহমেদ ফয়সাল, নুরুজ্জামান ও সানজিদা হক।

ডা. সোহেল মাহমুদ ব্রিফিংয়ে জানান, নেপালি ও চীনা নাগরিকের মরদেহ স্বজনরা গ্রহণ করার পর বাংলাদেশিরা মরদেহ দেখার সুযোগ পাবেন। হতাহত ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ শনাক্ত সম্ভব হয়েছে। নিহত অপর ৯ বাংলাদেশির লাশ শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট লাগবে। আর আহত ১০ জন নেপাল, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এর আগে আজ মরদেহের তালিকা দেওয়া হবে শুনে সারাদিন হাসপাতালের সামনে ভিড় করেন অপেক্ষমাণ স্বজনরা। ব্রিফিংয়ের সময় তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

শনাক্ত করা মরদেহের তালিকা পড়ছেন প্রমোদ শ্রেষ্ঠা

গত ১২ মার্চ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগ-মুহূর্তে পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন ওই ফ্লাইটে। এর মধ্যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশের ২৬ জন ও নেপালের ২২ জন। এছাড়া চীনের একজন যাত্রী নিহত হন। আহতদের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি, ১২ জন নেপালের ও একজন মালদ্বীপের নাগরিক।

 

ওই ফ্লাইটে থাকা আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে পাঁচজন নেপালের হাসপাতাল ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে রেজওয়ানুলকে কাঠমান্ডুর ওএম হাসপাতাল থেকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে। আর শাহরিন আহমেদ, রুবায়েত, মেহেদী হাসান, তার স্ত্রী সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা ও মেহেদীর ভাবি আলমুন নাহার অ্যানি দেশে ফিরেছেন। তাদের ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে।