মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে রডের দাম বাড়িয়েছেন: সংসদীয় কমিটিতে অভিযোগ

 

সংসদীয় কমিটির বৈঠকসরকারের উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত করতে মিল মালিকেরা সিন্ডিকেট করে রডের দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন এ অভিযোগ তুলে কমিটির সভাপতির কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ানোর কথাও তোলেন। এদিকে, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বাহাউদ্দিন অনুপস্থিত থাকলেও তার চিঠি নিয়ে আলোচনা হয়। পরে কমিটি এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলে।

কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, ছানোয়ার হোসেন, লায়লা আরজুমান বানু ও মোহাম্মদ হাছান ইমাম খাঁন অংশ নেন।

জানা গেছে চিঠিতে আ ক ম বাহাউদ্দিন বলেন, ‘রডের হঠাৎ দাম বাড়ায় সব ধরনের উন্নয়ন কাজ বাদাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক জায়গায় ঠিকাদাররা কাজ করছেন না। নির্বাচনি বছরে মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে উন্নয়ন সামগ্রীর দাম বাড়িয়ে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন ব্যাহত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার এলাকায় উন্নয়ন কাজের ‍উদ্বোধন করার কারণে আমি বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে, রড ও সিমেন্টসহ নির্মাণ সামগ্রী বৃদ্ধি নিয়ে কমিটির কাছে একটি চিঠি দিয়েছি।’

চিঠির বিষয়বস্তু সম্পর্কে আ ক ম বাহাউদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনি বছরে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সিন্ডিকেট করে রডের দাম বাড়ানো হয়েছে। সরকারের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতেই এটা করা হয়েছে। আমি সংসদীয় কমিটিকে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সংসদীয় কমিটি আলোচনা করেছে। কমিটির পক্ষ থেকে বাণিজ্যমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’ তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন রডের দাম কমানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে, গত ২৯ মার্চ ঢাকায় ৬০ গ্রেডের রড টনপ্রতি ৭১ হাজার টাকা থেকে ৭২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে, যার একসপ্তাহ আগের দর ছিল ৬২ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে ৪০ গ্রেডের রড টনপ্রতি দর হচ্ছে ৫৮ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা, যা একসপ্তাহ আগে ছিল ৫২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার টাকা।

নির্মাণখাতের উদ্যোক্তাদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রি (বিএসিআই) অভিযোগ করেছে অসাধু ব্যবসায়ীদের একটি চক্র পরস্পর যোগসাজশ করে রডের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। অবশ্য রড উৎপাদনকারীদের বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বৃদ্ধির অভিযোগ অস্বীকার করেন।