বাড়ির পানে ছুটছে মানুষ

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)এদিক-ওদিক মানুষ আর মানুষ। সবার চোখেমুখে বাড়ি ফেরার অপেক্ষা। আর স্বজন ও প্রিয়জনের কাছে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা। বাড়ির পানে ছুটতে যেন নেই মানা!

মঙ্গলবার (১২ জুন) সকালে কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরমুখো অসংখ্য মানুষের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেই ট্রেনের অপেক্ষায় ঘরমুখো মানুষ। ট্রেন ছাড়ার অনেক আগেই স্টেশনে হাজির হয়েছেন যাত্রীরা। সবার হাতেই ব্যাগ-লাগেজ।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৩ জুন যারা অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন তারাই মঙ্গলবার বাড়ি ফিরছেন। গত ১০ জুন থেকে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে। সেই হিসেবে আজ তৃতীয় দিনের মতো কমলাপুর স্টেশন থেকে ট্রেনযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)গত কয়েকদিনের তুলনায় মঙ্গলবার যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে বেশি। আগামী তিন দিন এই ভিড় আরও বাড়বে বলে মনে করছেন স্টেশন সংশ্লিষ্টরা।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সিতাংশু চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মোট ৬৬টি ট্রেন কমলাপুর থেকে দেশের বিভিন্ন বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে। সকাল ১১টা পর্যন্ত ছেড়েছে প্রায় ২৫টির মতো ট্রেন।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়িয়েছে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা একতা এক্সপ্রেস। যাত্রী না নামতেই ট্রেনে উঠতে শুরু করেন স্টেশনে অপেক্ষমাণ অন্যান্য যাত্রীরা। মুহূর্তেই ভরে গেলো ট্রেনের সবকটি বগি। কিছুক্ষণ পরেই ট্রেনটি আবার কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাবে। বগিতে জায়গা না পেয়ে ঝুঁকি থাকলেও ছাদকেই বেছে নিয়েছেন অনেকে। 

এই ট্রেনে চড়ে যাত্রার জন্য সকাল ৯টায় স্টেশনে এসে পৌঁছান আফরোজা কলি। সঙ্গে নিজের দুই মেয়ে। স্বামী গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী তাদেরকে স্টেশনে পৌঁছে দিয়ে গেছেন। তবে অফিস থাকার কারণে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে পারেননি।

সকাল সোয়া ৯টায় ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে রংপুরের উদ্দেশে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে রংপুর এক্সপ্রেস। এতেও ছিল উপচেপড়া ভিড়। ট্রেনের চাকা চলতে শুরুর পরপরই সাধারণ যাত্রীদের অনেকে হৈ-হুল্লোড় করেছেন।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)এদিকে মঙ্গলবার সুন্দরবন এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ও দিনাজপুর এক্সপ্রেস কিছুটা দেরি করে ছেড়েছে বলে জানা গেছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সিতাংশু চক্রবর্তী বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিন কমলাপুর থেকে প্রায় ৭০-৭৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রান্তে যাবেন। যাত্রী চাপ সামলাতে প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা আছে। তবে দুই-একটি ট্রেন স্টেশনে দেরিতে পৌঁছায় কয়েক মিনিট দেরিতে ছেড়েছে।