জনশক্তি নিতে পুরনো প্রক্রিয়ায় ফেরত যাচ্ছে মালয়েশিয়া!





মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক

বাংলাদেশের সঙ্গে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী মালয়েশিয়ায় জনশক্তি পাঠানোর প্রক্রিয়া স্থগিত ঘোষণা করেছে সে দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী এম কালুসেগারান। শুক্রবার মালয়েশীয় পত্রিকা `দি স্টার’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা চলমান প্রক্রিয়াকে স্থগিত ঘোষণা করছি এবং আবার পুরনো প্রক্রিয়ায় ফেরত যাচ্ছি, যেখানে সরকার এই গোটা প্রক্রিয়ার ব্যবস্থাপনায় থাকবে।’ তবে মালয়েশিয়ার সরকার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে জানায়নি বলে নিশ্চিত করেছে সেখানকার বাংলাদেশি দূতাবাস।
২০১২ সালে দুই দেশ শুধুমাত্র সরকারি মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় লোক পাঠাতে একটি চুক্তি সই করে। ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর সেটিকে পরিমার্জন করে ১০টি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
‘দি স্টার’ মালয়েশীয় মন্ত্রী এম কালুসেগারানকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ‘একটি সিন্ডিকেট মানবপাচারের মাধ্যমে শ্রমিকদের প্রতারিত করছে—এই অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে।’ মন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘আগের প্রশাসন জনশক্তি প্রক্রিয়াটিকে একটি ব্যবসায়ীক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে কয়েকজন ব্যক্তিকে সুবিধা দিয়েছে। এখন শ্রমিকদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে, যা বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে চলে যাচ্ছে এবং গোটা বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়।’ এম কালুসেগারান জানান, যতক্ষণ না এর সমাধান হচ্ছে আমরা আবেদন প্রক্রিয়া আগের সিস্টেমে সরকারের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে।’
যোগাযোগ করা হলে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের শ্রম কাউন্সিলর মো. সাইয়েদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়নি। আমরা প্রতিবেদনটি দেখেছি, কিন্তু আনুষ্ঠানিক কোনও বক্তব্য পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পেলে বিস্তারিত বলতে পারবো।’ সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, ‘এক্ষেত্রে এককভাবে কোনও কিছু করার সুযোগ নেই। কারণ, এটি একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং এর যেকোনও সমস্যা দুই পক্ষকে বসে ঠিক করতে হবে।’
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকরা যাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর জানি তারা আসছে।’
দূতাবাসের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় নতুন সরকার গঠিত হয়েছে এবং এটি স্বাভাবিক তারা আগের নিয়মগুলো বুঝবে, জানতে চাইবে এবং গোটা বিষয়টি নিজেদের মতো করে সাজাতে চাইবে।’ তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ বাংলাদেশের একজন বন্ধু এবং তার আগের মেয়াদে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছিল।