‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’ গঠন করবে সরকার

শিক্ষা মন্ত্রণালয়শিক্ষার জাতীয় প্রমিতমান নির্ধারণে দেশের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা হিসেবে ‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’ গঠন করবে সরকার। এ লক্ষ্যে আইনের খসড়া প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রমের জাতীয় প্রমিতমান (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) নিশ্চিত করবে এ কাউন্সিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান হবে ‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’। প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের জাতীয় প্রমিতমান (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যূনতম মান প্রতিষ্ঠা করতে এই কমিশন গঠন করা হবে। এ লক্ষ্যে ‘জাতীয় শিক্ষক শিক্ষা কাউন্সিল’ আইনের খসড়া প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রণালয়। শিগগিরই মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর ধরে প্রস্তুত করা আইনের খসড়াটি গত ৮ আগস্ট প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনার পর খসড়াটি প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যে বলা হয়েছে, ‘মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ন্যূনতম মান প্রতিষ্ঠা ও মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করবে এই সংস্থা। এছাড়া শিক্ষকদের ন্যূনতম প্রমিতমান অনুযায়ী নিবন্ধন দেওয়া হবে।’

কাউন্সিলের কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষামন্ত্রী কাউন্সিলের সভাপতি ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সহসভাপতি হবেন। মোট ২৬ সদস্যবিশিষ্ট কাউন্সিলের সদস্যসচিব থাকবেন কাউন্সিল কার্যালয় সংগঠনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সদস্য থাকবেন।

এছাড়া সরকার মনোনীত সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ, বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রয়েছে সরকার মনোনীত এমন দুই ব্যক্তি কাউন্সিলের সদস্য থাকবেন।

কর্মপরিধি অনুযায়ী, শিক্ষক শিক্ষা প্রশিক্ষণের গুণগতমান নিশ্চয়তায় পদ্ধতি উদ্ভাবন এবং জাতীয় প্রমিতমানের (ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড) লক্ষ্যে পর্যবেক্ষণ, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করবে এই কাউন্সিল। শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগতমান নিশ্চিত করতে যে রকম পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করবে তা-ও করতে পারবে কাউন্সিল। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অংশীজনের মতামত নিয়ে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদনের জন্য। 

আরও পড়ুন- লুটপাটে ব্যর্থ হয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের প্রকল্প বন্ধে সক্রিয় ‘সিন্ডিকেট’