এক গরুতেই কসাই খরচ সাড়ে ৫ লাখ!

কোরবানির পশুকোরবানির ঈদ এলেই সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে কসাইয়ের। কাজের চাপ থাকায় সবার মন রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়ে কসাইদের। তাই বেশিরভাগ মানুষই ঈদের আগেই যার যার পছন্দ অনুযায়ী কসাই ঠিক করে ফেলেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবার চায় ঈদের নামাজের পরপরই কোরবানির আনুসাঙ্গিকতা সেরে ফেলার। তাই কসাইয়ের চাহিদা সকালের সময়টা একটু বেশিই থাকে।

ঈদে যারা বড় গরু কিনছেন তাদের কসাই খরচটা একটু বেশি পড়ছে। হিসাব করে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে সম্প্রতি আনা ১৫শ কেজি ওজনের বাহাদুর বিক্রি হয়েছে ২৮ লাখ টাকায়। এই বাহাদুরকে কোরবানি দিলে তার কসাই খরচ হাজারে ২০০ টাকা করলে দাড়ায় পাঁচ লাখ ৬০ হাজার। অন্যদিকে ২৫ লাখ টাকার গরু কসাই খরচ দাড়ায় ৫ লাখ টাকা। আবার এক লাখ টাকা মূল্যের গরুর কসাই খরচ আসে ২০ হাজার টাকা। এছাড়া কসাইদের সঙ্গে পরিচিতি ভেদে সুসম্পর্কের ওপর নির্ভর করেও অনেকে চুক্তিভিত্তিক কাজ করে থাকেন। এতে খরচ কম বেশি হতে পারে। 

দক্ষ কসাই হলে একটা গরু বানানোর কাজ শেষ করতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। এক্ষেত্রে তাদের টাকাটাও একটু বেশি দিতে হয়। সময় যতই গড়াতে থাকে তাদের কাজের রেট কমতে থাকে। নামাজের পর কাজ করাতে হলে একজন দক্ষ কসাইকে ২৫০-৩০০ টাকা দিতে হয় গরুর দামের প্রতি হাজারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রেট কমতে কমতে দাড়ায় ১৫০ টাকায়। ঈদের দ্বিতীয় দিন রেট হাজারে ১০০ টাকা হয়।

রাজধানীর খিলগাঁও, মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, বসুন্ধরা, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারিবাগ এলাকার কসাইদের কাজের রেটের মধ্যে খুব বেশি একটা পার্থক্য দেখা যায় না। খিলগাঁও,মালিবাগ,রামপুরা এবং বাড্ডা এলাকার কসাই হাজারে ১০০-২০০ টাকা নিয়ে থাকে। গুলশান এবং বসুন্ধরা এলাকায় হাজারে ২০০-৩০০ টাকা নিয়ে থাকে আর মোহাম্মদপুর,ধানমন্ডি এবং হাজারিবাগ এলাকার কসাই হাজারে ১৫০-২৫০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।

মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারের কসাই মুরাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোরবানির ঈদ আসার ১৫ দিন আগেই আমাদের পূর্বপরিচিত কাস্টমারদের বুকিং হয়ে যায়। ঈদের দিন হাজারে ২০০ টাকা আর ঈদের পর হাজারে ১০০ টাকা করে নেই আমরা।’

বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রবিউল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  ‘অনেকে চুক্তিতে কাজ করে থাকে। এতে কাস্টমার আর মাংস শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকে। চুক্তিতে কাজ করলে মানুষ ন্যায্য দামে কোরবানি দিতে পারে। আমরা অনেক দিন ধরে চেষ্টা করে আসছি আমরা চাচ্ছিলাম এই দর নিয়মিতকরণের মধ্যে নিয়ে আসতে। প্রতিটা দামের বিপরীতে মাংস ব্যবসায়ীর খরচ নির্দিষ্ট নির্ধারণ করার কথা আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি।’