চিকিৎসকদের তিন বছর গ্রামে থাকতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী





স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম (ছবি: সংগৃহীত)
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে সাত হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদের গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে তিন বছর বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করতে হবে। তিন বছরের নিয়ম করে যাওয়া হবে। তিন বছর পর ওই চিকিৎসকরা বদলি পাবেন।

বুধবার ‘ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস প্রিভেলেন্স সার্ভে বাংলাদেশ ২০১৫-১৬’ শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে একথা বলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘যারা চিকিৎসক হয়েছেন তারা কৃষকের সন্তান, সাধারণ মানুষের সন্তান। তাদের প্রথম কাজ হবে গ্রামের মানুষের সেবা করা। গ্রামে গিয়ে তাদের কাজ করতে হবে। অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘একবার আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ছয় হাজার চিকিৎসক নিয়েছিলাম। তখন বলেছিলাম দুবছর তাদের গ্রামে থাকতে হবে। এরই মধ্যে অনেকে চলে আসে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের তিন হাজার চিকিৎসক কাজ না করেই বেতন নেয়। এই খবর পাওয়ার পর আমি তাদের বেতন দেওয়া বন্ধ করতে বলেছি। তারা আর বেতন নিতে আসে না। কারণ, বেতন নিতে আসলেই ধরা পড়ে যাবে তারা কোথায় কোথায় কাজ করছে।’
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা রোগকে ৯০ ভাগ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কাজ করে যক্ষ্মা নির্মূল করবো। এই রোগ নির্ণয়ের জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন সারাদেশের সব হাসপাতালে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেন, ‘আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে মাত্র ১০ ভাগ রোগী চিকিৎসা নেয়। প্রাইভেট সেক্টরে চিকিৎসা নেয় ৫১ ভাগ রোগী। যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা আরও বাড়ানো উচিত।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি এক লাখে ৪০০ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত। কিন্তু আমাদের সার্ভেতে দেখা যাচ্ছে, ৪০০ থেকে ২০৬ জনে নেমে এসেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব কমেছে।’
জাতীয় যক্ষ্মা বিষয়ক সার্ভের টিমের প্রধান প্রফেসর ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের মধ্যে যক্ষ্মার প্রবণতা বেশি। আবার অল্প বয়সীদের চেয়ে বেশি বয়সীরা যক্ষ্মায় বেশি আক্রান্ত হয়।’
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ—স্বাচিপের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সেনাল, ডাব্লিউএইচওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. এডউইন সালভাদর, নাটাবের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু, স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইন ডিরেক্টর (যক্ষ্মা, কুষ্ঠ) ডা. সামিউল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।