শিল্পীর জন্মদিনে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালায় এই উৎসবের আয়োজন করে শিল্পী শাহাবুদ্দিন ৬৯তম জন্মদিন উদযাপন জাতীয় কমিটি এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
প্রদর্শনী দেখা শেষে কথা বললেন আগত সাংবাদিকদের সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, ‘অনেকে অনেক কিছুই ভাবে, আমার কারও কথা মনে না হলেও তার কথা সব সময় মনে পড়ে। আমার সারাক্ষণই মনে হয় তিনি তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। বঙ্গবন্ধুর কারণেই আমরা এখানে একত্রিত।’
এ সময় শিল্পী শাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর শূন্যতা আমরা কোনোদিন পূরণ করতে পারবো না। তার ভালোবাসা, স্নেহ এবং স্প্রিট আমি বহন করার চেষ্টা করবো। বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা মনে হয় আমাকে আরও দূরে নিয়ে যাবে।’
সমবেত নৃত্য এবং সংগীত দিয়ে সাজানো হয় পুরো অনুষ্ঠানটি। এ সময় ফুল দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে আসেন অনেকেই। তাদের মধ্যে ছিলেন— প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সাবেক সেনা প্রধান হারুন উর রশিদ, বিমান বাহিনীর ডেপুটি চিফ এয়ার ভাইস মার্শাল সানাউল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন নেসার হোসেন, গ্যালারি কসমসের পরিচালক তাহমিনা এনায়েত, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, বরেণ্য শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. আবদুল হান্নান প্রমুখ। এ সময় টেলিফোনে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য এই আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদকে এই বিশেষ দিনে আমরা বাংলাদেশে আমাদের মাঝে পেয়েছি। তার জন্মদিনে আমি উপস্থিত হতে পেরে সম্মানিত। সুপ্রিয় শাহাবুদ্দিন আহমেদ আমাদের অহংকার। একাত্তরে অকুতোভয় সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশপ্রেমিকের এক বিমূর্ত উজ্জ্বল উদাহরণ তিনি। একাত্তরকে শুধু তিনি তার চেতনায় ধারণ করেন না, তার অভিব্যক্তি ঘটে তার সুনিপুণ রঙ-তুলি দিয়ে ক্যানভাসে চিত্রায়িত প্রতিটি শিল্পকর্মের মধ্যে। আমরা তার কাছে পাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অসংখ্য চিত্রকর্ম, যা তার রঙ-তুলিতে সুউজ্জ্বল। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, “তুমি কেমন করে গান করো হে গুণী, আমি অবাক হয়ে শুনি।” আর তাই আমি আজকে বলতে চাই শিল্পী শাহাবুদ্দিনকে, তুমি কেমন করে ছবি আঁকো হে গুণী, আমরা অবাক হয়ে তাকিয়ে রই।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শাহাবুদ্দিনের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাই, তার দীর্ঘ জীবন কামনা করি। শাহাবুদ্দিনের শিল্পকর্ম তাকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে পরিচিত করেছে। বিশ্বের ৫০ জন সেরা শিল্পীর মধ্যে তিনি একজন। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।’
অনুষ্ঠান শেষে কেক কেটে শাহাবুদ্দিন আহমেদের ৬৯ তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, শাহাবুদ্দিন আহমেদের ৬৯ তম জন্মদিন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আবদুল মান্নান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মারিয়ে এনিক বুরডিন, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক ও গীতিকার জুলফিকার রাসেল, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী মুন্নী সাহা এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, শিল্পী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।