দালালমুক্ত কর্মী নিয়োগের পথে মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক (ছবি- সংগৃহীত)

অবশেষে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে নতুন কী পদ্ধতি হবে সে ধোঁয়াশা কাটছে।  ঢাকায় দুই দেশের মন্ত্রণালয় পর্যায়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে নতুন এই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে।  এজন্য মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৩১ অক্টোবর একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করবেন সচিব রৌনক জাহান। বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন।     

এদিকে, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিবাসন প্রক্রিয়ায় মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য শেষ করতে সব ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি কোম্পানি সম্পন্ন করবে। এর আগে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে আউটসোর্সের কাজ করতো ১০০টিরও বেশি কোম্পানি। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে এই আউটসোর্সিং প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এই কোম্পানিগুলো মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যুক্ত থাকলেও এখন তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করবে মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে আগামী বছর থেকেই। মালয়েশিয়ার এই দুই মন্ত্রণালয়ের যৌথ সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বারনামাকে বলেছেন, ১০০’র বেশি কোম্পানির অধীনে প্রায় ২৬ হাজার কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আছেন। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই কোম্পানিগুলো বিদেশি শ্রমিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারাবে। দুই মন্ত্রণালয়ের বিদেশি শ্রমিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়কে বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওই কোম্পানি বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সম্পন্ন হবে। বর্তমানে যেসব কোম্পানি যুক্ত আছে তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে সমঝোতা পরে হবে বলেও জানান তিনি।

মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮ লাখ ৯২ হাজার ২৪৭ জন বিদেশি শ্রমিককে অস্থায়ী পাস দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, নেপাল, ভারত এবং মিয়ানামারের নাগরিকদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। 

বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে মালয়েশিয়া এখন সিঙ্গাপুর নীতি অবলম্বন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগেরান। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে সিঙ্গাপুর মডেলকে অনুসরণ করে। স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগে প্রাধান্য দিয়ে বিদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ হবে এই প্রক্রিয়ায়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ ও প্রশাসন) আমিনুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়ার বাজারে নানা সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ হতে পারে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিংয়ে। তাদেরও কিছু প্রস্তাবনা আছে, সেগুলা নিয়ে মূলত আলোচনাটা হবে।