সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন অকেজো থাকা সিগন্যাল বাতিগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয় পুলিশ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গতমাসের মাঝামাঝিতে নগরীর ২০টি সড়ক ইন্টারসেকশনে সিগন্যাল বাতির মাধ্যমে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে পুলিশ। এসব সিগন্যালে ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের কথা। কিন্তু পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া স্বয়ংস্ক্রিয় সিগন্যাল বাতি সফলতা পায়নি। এজন্য এক পর্যায়ে সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নগরীর যেসব স্থানে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল চালু করা হয়েছিল সেগুলো হচ্ছে বাংলামোটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, শাহবাগ, রাজারবাগ, ফকিরাপুল, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা, পল্টন, কাকরাইল, নাইটইঙ্গেল মোড়, বিচারপতির বাসভবন, মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, বেইলি রোড, ধানমন্ডি-২৭, রাসেল স্কয়ার, ধানমন্ডি ১০ ও ধানমন্ডি-৭।
পান্থপথ মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ শফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সিগন্যালের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ফলে একদিকে দীর্ঘ যানজট, অন্যদিকে ফাঁকা। মানুষ বিরক্ত হয়। বাধ্য হয়েই আবার হাতের ইশারায় কাজ করতে হয়।’
প্রধান বিচারপতির বাসভবন সংলগ্ন ট্রাফিক ইন্টারসেকশনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার সরকার ছুটির দিন প্রথম আওয়ারে সিগন্যাল বাতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু অন্যান্য দিন যখন পরিবহনের সংখ্যা বেশি থাকে তখন নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সফলতা পাওয়া যাচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না। যখন যানবাহনের চাপ বেড়ে যায় তখন আমরা হাতের ইশারায় শুরু করি।’
সিগন্যাল ও হাতের ইশারায় কাজ করায় অনেক চালককে বিভ্রান্ত হতে দেখা দেছে। রিয়াজ উদ্দিন নামে একজন প্রাইভেটকার চালক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে দেখেছি সিগন্যাল বাতির মাধ্যমে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। কিন্তু আজ দেখছি আবার হাতের ইশারায়। এতে তো আমারা বিভ্রান্ত হচ্ছি। এতে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।’
এদিকে সম্প্রতি এসব ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বর্তমানে দুই সিটি করপোরেশনের ৬২টি ট্রাফিক ইন্টারসেকশনের ৮৮টি সিগন্যালে রিমোট কন্ট্রোল অটোমেটিক বৈদ্যুতিক সিগন্যালের আওতায় আনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ ও কেইস প্রকল্পের পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পুরো ব্যবস্থাপনাটি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে ২০টি স্থানে অটো সিগন্যালের মাধ্যমে পুলিশ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে সফলতা ব্যর্থতা পুলিশই বলতে পারবে। সিগন্যালগুলোতে রিমোর্ট কন্ট্রোল অটোমেটিক চালু হলে এই সমস্যা আর থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১০ বছর আগেও মানুষ সিগন্যাল বাতির ইশারায় যানবাহন চালিয়েছে। এরপর যানবাহনের চাপে সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মানুষের অভ্যাস নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে অভ্যস্ত করতে। মানুষকে যেমন নিয়ম মানতে হবে ঠিক পুলিশকেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’