ভিকারুননিসা শিক্ষার্থীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত

অরিত্রী অধিকারী ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর ‘আত্মহত্যা প্ররোচনা’র বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় প্রিন্সিপাল (ভারপ্রাপ্ত) নাজনীন ফেরদাউসসহ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। ওই প্রতিবেদনে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতী শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদাউস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার এবং শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছি। গভর্নিংবডি তাদের বরখাস্ত করবে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা (মামলা) গ্রহণ করা হবে। তিন শিক্ষকের এমপিও বাতিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া গভর্নিংবডির বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরাধে জড়িত থাকায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল (ভারপ্রাপ্ত) নাজনীন ফেরদাউস, শিফট ইনচার্জ জিনাত আক্তার এবং শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনার অশোভন আচরণ, ভয়ভীতি প্রদর্শন, নির্মম ও নির্দয় আচরণ দেখে অরিত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ বিষয়টি তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করে। অরিত্রী বাবা-মায়ের অপমান ও অসম্মানের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি বলেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এর দায় কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, শিফট ইনচার্জ ও শ্রেণি শিক্ষক এড়াতে পারেন না। সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে অরিত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে বলে তদন্ত কমিটি সুপারিশ করে।

এদিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে অরিত্রীর বাবা ওই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।