কাদের আয়োজন
‘প্রথম আলো’র আয়োজনে বেশ কয়েক বছর যাবৎ ধানমন্ডির মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে চলছে এই বর্ণমেলা। এখানে একদিকে শিশুরা নিজের মতো করে লিখছে, কোথাও তারা ক্যানভাসজুড়ে একসঙ্গে ছবি আঁকছে। আরেকদিকে মূল মঞ্চে দেশের গান পরিবেশন করছে। মাঠের একপ্রান্তে একটি ছোট শহীদ মিনার বানানো হয়েছে। চাইলে কেউ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসতে পারেন।
রেজওয়ান হাসান সন্তানের কাছে চিঠি লিখতে লিখতে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সন্তানকে কে না ভালোবাসে। কিন্তু তাকে নিয়ে দু-এক লাইন লেখার এখন আর সুযোগ নেই। আমাদের ছেলেবেলায় বাবা-মায়ের চিঠি পেতাম হোস্টেলে বসে। সেই চিঠিতে বুঝতাম তারা কতটা মিস করে আমাকে। কিন্তু এখন সে সুযোগ কই। যান্ত্রিক জীবনে মিস করার কথা জানানোর সুযোগও হয় না। তাই আজ কয়েক লাইন লিখছি।’
এছাড়া ছিল আরও অনেক আয়োজন। চাইলে কেউ একটু খেতে পারবেন একপাশে গিয়ে, সিসিমপুরের আয়োজন ছিল। একপাশে ছিল ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্টলও। আর ছিল নাগরদোলায় ওঠার উচ্ছ্বাস।
বর্ণমেলার আয়োজন প্রথম শুরু হয় যে বছর সে বছর থেকে নিয়মিত এই আয়োজনে ছেলেদের নিয়ে আসেন তারেক ইসলাম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগে অনেক ভালো ছিল। এখন ধীরে ধীরে বর্ণমেলায় বর্ণ কমে গেছে। বেশি ছোট শিশুদের এখানে এসে মজা পাওয়ার সুযোগ কম এখন। আয়োজকরা বাণিজ্যিকভাবে এটি করবেন সেটা স্বাভাবিক কিন্তু বর্ণমেলা আর বৈশাখিমেলায় পার্থক্য থাকা জরুরি বলে আমার মনে হয়।’
মেলা থেকে বের হয়ে দীর্ঘপথ হাঁটতে হচ্ছে সবাইকে। সাত বছরের সন্তানকে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক মা। ছেলেকে বাংলা ছড়া বলতে বলেছেন। শিশুটি ‘মনে কর যেন বিদেশ ঘুরে মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে’ ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে বলছে। মা নাজনীন সিকোয়াকে জিজ্ঞেস করি, কেন নিয়ে এসেছিলেন শিশুটিকে? তিনি বললেন, ‘সন্তানকে দেশ, সংস্কৃতি ও দেশের ইতিহাস জানানোর দায়িত্ব অভিভাবকদেরই। আগে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার পর আর কিছু করার থাকতো না এই দিনটিতে। এ ধরনের আয়োজনে ভাষার দিকটি যদি আরেকটু বেশি উঠে আসে তাহলে আরও সহজ হবে শিশুমনের বুঝতে।