জানা গেছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৬৮ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ৪৩১ প্লটের জন্য ২৬ শতাংশ বুকিং মানি জমা দিয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের ২৪ প্রতিষ্ঠান ১০৭টি ও ঢাকার ৪৪ প্রতিষ্ঠান ৩২৪টি প্লটের বুকিং দিয়েছে। প্রতিটি প্লটে জমির পরিমাণ এক একর। বুকিং মানি হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রায় ৮৭ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার অদূরে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর থেকে আইএলও, অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্সের আরোপিত শর্তসহ অন্যান্য কারণে সারা দেশে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৭৯৫টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যাওয়া পোশাক কারখানার সংখ্যা ৩২৪টি। আর সারাদেশে পোশাক কারখানার সংখ্যা ৪ হাজার ৪৫৫টি। এসব কারখানার বড় একটি অংশই মিরসরাই পোশাকপল্লিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
জানা গেছে, এই পোশাকপল্লিতে প্লট পাওয়ার জন্য চট্টগ্রামের যেসব প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত বুকিং মানি জমা দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ক্লিফটন অ্যাপারেলস, ক্লিফটন কটন মিলস, আফরাহ ড্রেসেস, ভ্যানকট, ইমেজ গার্মেন্ট, গার্মেন্ট হোম (প্রা.), আদিলা অ্যাপারেলস, চার্ম ফ্যাশন, ফোর এইচ ফ্যাশন, তাফফ অ্যাপারেলস, ভিজুয়াল নিটওয়্যার্স, এআরএল অ্যাপারেলস, এআরএল ড্রেসেস, বিএলপি ওয়ার্ম ফ্যাশন, ওয়েল ফ্যাশন, ইউরেনাস অ্যাপারেলস, আল ইত্তেফাক টেক্সটাইলস, আরডিএম অ্যাপারেলস, কি-গার্মেন্ট, মেলো ফ্যাশন, মার্স সফটওয়্যার, মেনস্ ফ্যাশন, ও প্রগ্রেসিভ অ্যাপারেলস ইন্ডাস্ট্রিজ।
তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, এ উদ্যোগটি এ খাতের সংশ্লিষ্টদের জন্য একটি বড় সুযোগ। এটিকে কাজে লাগিয়ে রফতানি খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের মানুষদের জন্য মিরসইরায়ের ‘বিশেষায়িত পোশাকপল্লি’ বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি দেশের তৈরি পোশাকশিল্প খাতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলো নতুন করে এখানে স্থাপনের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ।
পোশাক খাতের মালিকরা বলছেন, অ্যাকর্ড, অ্যালায়েন্স, আইএলওর শর্ত পালন করতে না পেরে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে গেছে দুই হাজারের কাছাকাছি পোশাক কারখানা। এই পোশাক কারখানার অনেকগুলো মিরসরাই এসইজেডে (স্পেশাল ইকোনমিক জোন) নিতে যেতে চান তারা। এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেকগুলো কারখানা নতুন করে শুরু করার সুযোগ পাওয়া যাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রথম দিকে হয়তো এখানে দক্ষ ও প্রয়োজনীয় শ্রমিক পেতে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে পরবর্তীতে যখন পুরোপুরিভাবে সব কারখানা চালু হবে তখন হয়তো এ সমস্যা থাকবে না। ততদিনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাজের সন্ধানে শ্রমিকরা এখানে আসতে শুরু করবেন।
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, এ অঞ্চলের মিরসরাইয়ের পোশাকপল্লিতে কারখানা স্থাপনের পর এ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। এ খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি বড় উপহার। আর এ অঞ্চলের মানুষদের জন্য তো বটেই।