‘এ কোন বাংলাদেশকে দেখছি’

বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত রিভা গাঙ্গুলী (ছবি-পিআইডি)

ঢাকায় ভারতের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রিভা গাঙ্গুলী দাস বলেছেন, ‘১৯৯৮ সালের পর আমি চার বছর এ দেশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছি। দায়িত্ব শেষে তখন যে বাংলাদেশকে দেখে গেছি, আজ সে অবস্থান থেকে অনেক উচ্চতায় বাংলাদেশ। এ কোন বাংলাদেশকে দেখছি। এতো অল্প সময়ে এতো পরিবর্তন, এতো উন্নয়ন সত্যিই অবাক করার মতো। এতো অল্প সময়ে কীভাবে এ উন্নয়ন সম্ভব? বাংলাদেশের উন্নয়ন সত্যিই চোখে পড়ার মতো।’
সোমবার (১৮ মার্চ) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই অনুভূতির কথা জানান তিনি। বাংলাদেশের উন্নয়নে তিনি অভিভূত বলে মন্তব্য করেন এ কূটনীতিক। বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ভারতের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব বিষয়ে নানান কথা বলেন।
এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়াতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ভারত চায় বাংলাদেশের তৈরি পণ্য ভারতে রফতানি হোক। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। বাণিজ্য সহজ করতে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ভারত একটি বড় বাজার। ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ভারতের বাজারে বিক্রি করলে বাংলাদেশ লাভবান হবে। বাংলাদেশ সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত হাট ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে ৪টি হাট চালু আছে, আরও ৬টি হাট চালুর প্রক্রিয়া চলছে। উভয় দেশের মানুষের পণ্য কেনার সীমা বাড়ানো হয়েছে এবং এ সীমান্ত হাটের পরিধিও বাড়ানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতের অনেক বিনিয়োগ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। এরমধ্যে মিরসরাই এবং মোংলায় দুটি বড় আকারের ইকোনমিক জোনে ভারত বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীতে উভয় দেশের বাণিজ্যে দৃশ্যমান অনেক পরিবর্তন আসবে।
টিপু মুনশি বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে ৮৭৩ দশমিক ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৮ হাজার ৬১৯ দশমিক ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাংলাদেশ রফতানি পণ্যের অনেক কাঁচামাল ভারত থেকে আমদানি করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি করে থাকে। সেখানে বাংলাদেশের আমদানির চেয়ে রফতানি অনেক বেশি।
রিভা গাঙ্গুলী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। এসব সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। ভারত চায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাক। এজন্য ভারত বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পণ্য ভারতের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। অনেক পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে ভারতে। উভয় দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা বা জটিলতা রয়েছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা হবে। সীমান্ত হাটের প্রতি উভয় দেশের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এ হাটের সংখ্যা বাড়াতে কাজ চলছে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালনকারী অতিরিক্ত সচিব এসএম রেজোয়ান হোসেন, অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ভারতের নতুন হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস