রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসনের সাক্ষাতপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে সে দেশের সরকারের প্রতি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে যত দ্রুত তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা যাবে ততই সেটা সকলের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।’ মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের নবনিযুক্ত হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবং যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার উভয়েই চান তারা (রোহিঙ্গা) যেন নিরাপদে নিজ দেশে ফেরত যায়।’
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে তাদের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গারা সংখ্যায় অনেক। ইতোমধ্যেই ক্যাম্পে প্রায় ৪০ হাজার নবজাতক জন্মলাভ করেছে এবং তারা সংখ্যায় কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণকেও ছাড়িয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার সরকার কতৃর্ক কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন এবং রোহিঙ্গাদের সফলভাবে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সমাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এখন আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যুক্তরাজ্য এ দেশের সঙ্গে কাজ করতে চায় বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে।’ হাইকমিশনার বলেন, ‘পরবর্তী ক্লাইমেট সামিট ২০২০ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে এবং এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।’ তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রশ্নে তার দেশের ব্যবসায়ীদের আগ্রহের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘ব্রিটিশ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে খুবই আগ্রহী।’
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের দেশব্যাপী বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সারাদেশে একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছি। এখানে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।’ শেখ হাসিনা নবনিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ব্রিটেনের মধ্যে খুব ভালো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে এবং আমরা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এই সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে চাই।’ প্রধানমন্ত্রী দেশের রফতানি খাত সম্প্রসারণে তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা আমাদের রফতানিকে বহুমুখীকরণ করে রফতানি পণ্যের সংখ্যা আরও বাড়াতে চাই।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন। সূত্র -বাসস