শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৭তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি রয়েছে। পাঁচ বছর পর ২-৩ লাখ বিদেশি চট্টগ্রামে থাকবেন। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দেশের ১৭ শতাংশ যাত্রী ওঠানামা করে। তাই এ বিমানবন্দরের উন্নয়নের পাশাপাশি হাটহাজারীতে আরেকটি বিমানবন্দর করা যেতে পারে। ব্রিটিশ আমলে হাটহাজারীতে একটি বিমান বন্দর ছিল।’
তিনি বলেন, ‘একসময় কলকাতা ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। এরপর ছিল চট্টগ্রাম। পঞ্চাশের দশক পর্যন্ত চট্টগ্রাম থেকে জাহাজে করে মানুষ বম্বে-করাচি হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের অনেক বিদেশযাত্রা জাহাজে হয়েছিল। এরপরই বিমানের যাত্রা শুরু হয়। ষাটের দশকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সমৃদ্ধি একসঙ্গে শুরু হলেও ক্রমান্বয়ে চট্টগ্রাম পিছিয়ে যেতে থাকে।’
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মাহাবুবুর রহমান, ভারতীয় হাই কমিশন চট্টগ্রামের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জি ও ব্যবসায়ী নেতা সৈয়দ জামাল আহমেদ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানে নদীর তলদেশে টানেল নেই। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ করছে সরকার। কলকাতায় নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণের একটি প্রকল্প নেওয়া হলেও তা কখন চালু হবে জানা নেই। দুয়েক বছর পর সম্ভবত ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল চালু হবে।’
চট্টগ্রামে মেট্রোরেল স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কয়েকদফা আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতে তিনি সম্মতি জানিয়েছেন। ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এরিয়ার সৃষ্টি হলেও এরপর আয়তন আর বাড়েনি। তখন চট্টগ্রাম শহরের লোক সংখ্যা ছিল ১০ থেকে ১২ লাখ। বর্তমানে সেটা ৭০ লাখে পৌঁছেছে। ভাটিয়ারী, মদুনাঘাট, কালুরঘাট সেতুর অন্যপ্রান্তসহ অনেক জায়গা মেট্রোপলিটন এরিয়ার বাইরে। তাই মেট্রোপলিটন এরিয়া বাড়ানোর পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের এরিয়াও বাড়ানো প্রয়োজন।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স একটি অন্যন্য সাধারণ কাজ করেছে। বোম্বের পরে ভারতীয় উপমহাদেশে চট্টগ্রাম ছাড়া আর কোথাও ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নেই। এটি সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায়। তিনি ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর চট্টগ্রাম চেম্বারকে এই জায়গাটি দিয়েছিলেন। চেম্বারের মেলার জন্য স্থায়ী ভেন্যু চাই। রেল, বন্দর, সিডিএ কোন সংস্থার কাছে জায়গা আছে তা খুঁজে দেখেন। সবাই উদ্যোগ নিলে তারপর সেটির সংস্থান হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ টন ওজন স্কেলের কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের কস্ট অব ডুয়িং বেড়ে গেছে। ১৩ টন হলে সারাদেশের জন্য হওয়া উচিত। সবকিছু ঢাকাকেন্দ্রিক করা উচিত নয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা থেকে কৃষি পণ্যের ইমপোর্ট পারমিট ইস্যুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন কোম্পানির শ্রেষ্ঠ স্টল মালিকদের মাঝে ক্রেস্ট ও সনদ বিতরণ করেন। বাসস