‘ফণী’র খোঁজ রাখছেন সবাই


b1b03aed70db5bccd54956b848138bc5-5ccaa182e57f6আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় আঘাত হানতে পারে ‘ফণী’। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত ১০ বছরের মধ্যে শক্তিশালী ঝড় হবে এটি। এ কারণে ‘ফণী’ নিয়ে চারদিকে চলছে জোর আলাপ-আলোচনা। অনলাইন সংবাদমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে ‘ফণী’ এখন সবার মুখে মুখে।
ইন্টারনেটে আবহাওয়ার খোঁজ নিতে বারবার আবহাওয়া অধিদফতরের ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করায় দুপুর থেকে সাইট ডাউন হয়ে গেছে। অধিদফতর বলছে, মানুষ প্রতি মুহূর্তে জানতে চাইছে ‘ফণী’ কখন আসবে। আর এত মানুষ একসঙ্গে সাইটে ঢোকার চেষ্টা করায় চাপে পড়েছে ওয়েবসাইট।
রাস্তাঘাটে, বাসাবাড়িতে এমনকি অফিস-আদালতেও বৃহস্পতিবার (২ মে) দিনভর আলোচনায় ছিল ‘ফণী’। কেউ কেউ বলছেন, ‘ফণী’ বাংলাদেশে আসবেই না। ভারতেই দুর্বল হয়ে যাবে। আবার অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ এই মুহূর্তে সবচেয়ে চিন্তার মধ্যে আছেন। ঝড়ের গতি বেশি হলে কী হবে। এর আগে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতায় ‘আইলা’য় অনেক ক্ষতি হয়েছিল। তাই আতঙ্কও বেশি।
আবার কেউ কেউ ‘ফণী’ নিয়ে মজা করতেও ছাড়ছেন না। শংকর মৈত্রেয় নামের একজন সাংবাদিক তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের গ্রামের ফণীদাকে তো ছোটবেলা থেকেই চিনি। সে যে এভাবে দেশ বিখ্যাত হয়ে যাবে, ধারণা ছিল না!’
রাজধানীর দুই রিকশাচালক ‘ফণী’ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলেন। প্রথমজন বরিশালের বাসিন্দা রিকশাচাককে বলছিলেন, ‘তুই বাড়ি যা, ঝড় আসতেছে।’ যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা রিকশাচালকটি বলছিলেন, ‘বাড়ি যাওয়া লাগবে না। সেকেন্ডে সেকেন্ডে খবর আসে।’
‘ফণী’ নিয়ে সবচেয়ে সরগরম ফেসবুক। সেখানে সাতক্ষীরার এক বাসিন্দা লিখেছেন, ‘সাতক্ষীরায় ৭ নং সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আল্লাহ আমাদের হেফাজাত করুন। আরেকজন লিখেছেন, ‘ধেয়ে আসছে ফণী, আঘাত হানতে পারে শুক্রবার। রক্ষা করো মোদের হে প্রভু।’ আতঙ্কিত হয়ে আরেকজন লিখেছেন, ‘বিষধর সাপের ছোবল নিয়ে ‘ফণী’ আসছে! ভারত তার উপকূল থেকে আট লাখ মানুষ সরিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশের আয়তনের চেয়ে বড় আকারের এই ঘূর্ণিঝড় গত ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। মংলা বন্দর ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাচ্ছে। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।’
অনেকে আবার গরমে অস্থির হয়ে মজা করে লিখেছেন, ‘তোর পায়ে ধরি, প্লিজ, আয়।’ অনেকে আবার লিখেছেন, মাঠে পাকা ধান। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বিষয়ে নানা ধরনের সতর্কবাণী আসছে। এগুলোরও অনেক আগে ফসল বিষয়ে সতর্ক করা দরকার। দ্রুত এগুলো কেটে ঘরে নেওয়া প্রয়োজন, নইলে কঠিন সংকট শুরু হতে পারে। এমন অনেক অনেক স্ট্যাটাসে ভরে গেছে বাংলাদেশের ফেসবুক।
অন্যদিকে পত্রিকা বিশেষ করে অনলাইন পত্রিকাগুলোতে কিছুক্ষণ পর পরই প্রকাশিত হচ্ছে ‘ফণী’ নিয়ে নতুন নতুন তথ্য। যেমন, এখন আবহাওয়া অধিদফতরের বুলেটিনে কী আছে, ‘ফণী’ কতটা শক্তিশালী, কোন পথে আসছে ফণী, এর ক্ষতির পরিমাণ কী হতে পারে, সাগরে জলোচ্ছ্বাস হবে কিনা, ফণী মোকাবিলায় নেওয়া উদ্যোগগুলো, আবহাওয়ার সতর্ক সংকেতের মানে কী, আগের ঝড়গুলোর ইতিহাস, স্থানীয়ভাবে জেলাগুলোতে কী কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ইত্যাদি।
আবহাওয়া অধিদফতরের সাইট ডাউন হওয়ার বিষয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মানান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দুপুরের পর সাইট ডাউন হয়ে গেছে। সবাই হিট করছে তো এইজন্য সার্ভার, ব্যাক-আপ সার্ভার দুইটাই হ্যাং হয়ে গেছে। রিকভারির কাজ চলছে। দেখা যাক কী হয়। আমরা আপাতত ইমেইলে তথ্য দিয়ে দিচ্ছি।’