সারাদেশে ঝড়ো হাওয়া-বৃষ্টি অব্যাহত, নিম্নচাপে পরিণত হবে ফণী

ফণীর প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া বইছে

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ অতিক্রম করার সময় আরও দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ফণী। এর প্রভাবে সারাদেশে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করতে পারে। শনিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ঝড়টি সকালে খুলনা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পরই দুর্বল হয়ে পড়ছে। গতিবেগ আরও কমে ৬২-৮০ কিলোমিটার হয়েছে। এটি এখন সাধারণ ঝড়ে পরিণত হয়েছে। ফণী এখন দেশের মধ্যবর্তী স্থান ঢাকা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও মানিকগঞ্জ এবং এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও ৫-৬ ঘণ্টা বাংলাদেশে অবস্থান করবে। বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশের মধ্যবর্তী স্থান থেকে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের হিমালয় বা তৎসংলগ্ন এলাকায় পৌঁছুবে। ততক্ষণে এটি আরও দুর্বল হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে যদি এর প্রথম দিকের যে গতিপথ ছিল, সেটি আঘাত হানতো তাহলে বাংলাদেশে বড় ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটির গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় বড় ক্ষতির হাত থেকে আমরা বেঁচে গেছি। এখন যেসব স্থান দিয়ে এটি অতিক্রম করছে সেসব স্থানে ঝড়ো হাওয়া ও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর ফলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।’

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে সারাদেশে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন- 

পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ভেঙেছে ‘ফণী’

সাধারণ ঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘ফণী’

‘ফণী’ এখন বাংলাদেশে

দুর্বল হয়ে পড়ছে ফণী, কমেছে গতিবেগও

আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে ১২ লাখ মানুষ

‘ফণী’ মোকাবিলায় প্রস্তুত বাংলাদেশ: সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রস্তুতি এমন যে একটি প্রাণহানিও ঘটবে না: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

'ফণী' মোকাবিলায় সচিবালয় ও ১৯ জেলায় সব সরকারি অফিস খোলা

‘ফণী’ আঘাত হানতে পারে মধ্যরাতে

ঘূর্ণিঝড়: কোন সংকেতের কী অর্থ

১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় ‘ফণী’