যে কারণে কমেছে জিপিএ-৫

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২০১৯এবার মাধ্যমিকের পরীক্ষার পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। গত বছরের চেয়ে পাসের হার ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। তবে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা কমেছে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ জন। গত বছর ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন। কমেছে ৫ হাজার ৩৫ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের মানবিক বিভাগ ও সার্বিকভাবে সাধারণ গণিতের ফল খারাপ হওয়ার কারণে জিপিএ- ৫ কমেছে। শুধু তাই নয় সার্বিক ফলাফলেও এর প্রভাব পড়েছে। এই পরিস্থিতির কারণে পাসের হার আশানুরূপ হয়নি।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে গণিতে পাসের হার আগের বছরের চেয়ে ২ শতাংশ কমেছে। তার চেয়ে বেশি খারাপ করেছে মানবিক বিভাগ। সাধারণ গণিতে মানবিক বিভাগে পাসের হার কমেছে ৪ শতাংশ। এই কারণে সার্বিক ফলে প্রভাব পড়েছে। জিপিএ ফাইভ কমে গেছে।’

রাজধানীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সোমবার (৬ মে) বেলা ১১টায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আনুষ্ঠানিকভাবে ফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ২১ লাখ ২৭ হাজার ৮১৫ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এরমধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন ছাত্রী এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন ছাত্র। সার্বিক ফলে এবার ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে।  বিস্তারিত ফলে দেখা গেছে, এ বছর ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী ৫২ হাজার ৬৯২ জন বেশি অংশ নিয়েছে। আর ৫৬ হাজার ৬৩৩ জন ছাত্রী বেশি পাস করেছে।  ছাত্রের তুলনায় ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ ছাত্রী বেশি পাস করেছে। 

সারাদেশে মানবিকে এবার অংশ নিয়েছে ৭ লাখ ৭১ হাজার ১৯ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৯২ শিক্ষার্থী। ফেল করেছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ২৭ জন। গত বছর মানবিকে মোট অংশ নেয় ৭ লাখ ১৯ হাজার ৬৭৬ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। পাসের শতকরা হার ৬৯ শতাংশ।  অংশ নেওয়া ও পাসের হার মানবিকে বেশি হলেও ঢাকা শিক্ষা বের্ডে এই চিত্র ভিন্ন রকম।  কিন্তু ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে মানবিকে এবার পাসের হার ও জিপিএ কমেছে। 

ফলে দেখা গেছে ২০১৮ সালে মানবিকে পাস করেছে ৭১ দশমিক ৩ শতাংশ। এ বছর মানবিকে পাস করেছে পাসের শতকরা হার ৬৯ শতাংশ। পাসের হার শতকরা কমেছে ২ দশমিক তিন শতাংশ।  এর কারণে সার্বিক ফলের পাশাপাশি এ বছর জিপিএ-৫ কমে গেছে।

অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গণিতে ৮৬ শতাংশ পাস কম নয়। কিন্তু গণিতে পাস করলেও অন্য বিষয়ে ফেল করার কারণে ফেল করেছে। আমরা মানবিকে পাসের হার কমে যাওয়ার কারণ খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেবো। আর উচ্চতর গণিতসহ সাধারণ গণিতে ভালো করার পদক্ষেপ নেবো।’

উল্লেখ্য, এ বছর সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর তত্ত্বীয় পরীক্ষা-২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ৫ মার্চ। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ৬ মার্চ। এছাড়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ২৩ ফেব্রুয়ারি। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি।

সোমবার (৬ মে) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশ করা হয়। ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।