পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া ঈদের আগেই পরিশোধ করতে সংসদীয় কমিটির তাগিদ




ঈদের আগেই পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের তাগিদ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতেও বলেছে কমিটি। অবশ্য বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ( ১৬ মে) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই তাগিদ দেওয়া হয়।

কমিটির সভাপতি মির্জা আজমের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ইসরাফিল আলম, রনজিত কুমার রায়, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, খাদিজাতুল আনোয়ার ও তামান্না নুসরাত (বুবলী)।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মির্জা আজম সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্রুত পাওনা পরিশোধ করতে বলেছি। একইসঙ্গে কোনও ভুয়া শ্রমিক যেন বেতন নিতে না পারে, সেজন্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধের জন্য বলা হয়েছে।’

কমিটির সদস্য ইসরাফিল আলম বলেন, ‘আমরা বলেছি ঈদের আগেই শ্রমিকদের ন্যায্য পরিশোধ করতে হবে।’

বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা অঞ্চলে রয়েছে ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল। এতে প্রায় ৮০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বকেয়া থাকায় ৯ দফা দাবিতে লাগাতার ধর্মঘট করছেন।

শ্রমিকদের ঘোষিত দাবির মধ্যে রয়েছে, সরকার ঘোষিত ‘জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫’ সুপারিশ বাস্তবায়ন; অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বীমার বকেয়া টাকা পরিশোধ; টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল; শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ীকরণ; মৌসুমের সময় পাট কিনতে অর্থ বরাদ্দ; উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বিজেএমসিতে বিদ্যমান শ্রমিক অসন্তোষের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। শ্রমিকদের মূল দাবি বকেয়া মজুরি পরিশোধ বিষয়ে মন্ত্রনালয় কর্তৃক অর্থ মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় অর্থ ছাড়ের মাধ্যমে সমস্যা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পাটপণ্য বহুমুখীকরণ প্রক্রিয়া ও কার্যক্রমকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য জেডিপিসি কর্তৃক ঢাকা, নরসিংদী, চট্টগ্রাম, রংপুর, যশোর, টাঙ্গাইল ও জামালপুরে ৭টি বহুমুখী পাটশিল্প উদ্যোক্তাসেবা কেন্দ্র (জেইএসসি) স্থাপন করা হয়েছে বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।

এ পর্যন্ত জেডিপিসির উদ্যোক্তারা প্রায় ২৮০ ধরনের পাটজাত পণ্য উৎপাদন এবং তা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করা হয় বলে বৈঠকে জানানো হয়। বহুমুখী পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণে কাঁচামালের উচ্চমূল্য হ্রাস ও সহজপ্রাপ্তির জন্য কম্পোজিট (স্পেশালাইজড) জুট মিল স্থাপন, বিশ্ববাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন উন্নয়নে ডিজাইন সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন, দেশে ও বিদেশে প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনসহ নানাবিধ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

বৈঠকে পাটজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় পাটপণ্য মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।