রিফাতের হত্যাকারীদের দ্রুত ধরতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন: সেতুমন্ত্রী

সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী
বরগুনার ঘটনায় হত্যাকারীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আন্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বরগুনায় এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন, যেভাবেই হোক দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ বিভাগ বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলাপকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রীর উদ্দেশে সাংবাদিকরা প্রশ্ন রেখেছিলেন, বরগুনার ঘটনায় কি বলা যায় দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে? এর জবাবে মন্ত্রী উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনায় কি বলা যায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে?’ তিনি বলেন, ‘বরগুনা বলেন রূপগঞ্জ বলেন, কোনও ঘটনাই রাজনৈতিক নয়, রাজনৈতিক কারণে আইনশৃঙ্খলার কোনও অবনতি ঘটেনি। এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা বিশ্বের যেকোনও দেশেই ঘটে। এমন কোনও দেশ পাবেন না যেখানে সামাজিক অস্থিরতা নেই। তবে পুলিশ ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখছে।’

এ সময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যা প্রকাশ্যে ঘটেছে, এর বিচার হলে আজকের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতো না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদেরও বিচার হয়েছে। সরকার এসব বিষয়ে নমনীয় নয়।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে ‍যুবক হত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। পুলিশ সোর্সে জানতে পেরেছি ইতোমধ্যে একজন গ্রেফতার হয়েছে। যতদূর জেনেছি এটি প্রেমঘটিত, ব্যক্তিগত বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদেরও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।’

এ সময় সরকার হস্তক্ষেপ না করলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে সাত দিনে, মওদুদ আহমদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, বারবার এক বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করতে ভালো লাগে না। খালেদা জিয়ার বিচার ও জামিনে সরকার কখনও বাধা দেয়নি। সক্ষমতা থাকলে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তারা আন্দোলন করুক, কে বাধা দিয়েছে? তাদের ৫০০ জনের মিছিলও তো হয় না। তারা নির্বাচন ও আন্দোলন সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ। এমন ব্যর্থ বিরোধী দল আমি জীবনেও দেখিনি। বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই, এমন কোনও পরিস্থিতিও নেই।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে রিফাত ও তার স্ত্রী মিন্নি বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা রামদা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়। এ সময় মিন্নি তাদের বাধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। কিন্তু, তার বাধা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা রিফাতকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে বারবার আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান রিফাত। কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। সন্ত্রাসীরা তার হাত-পা, বুক, পিঠসহ সারা শরীর কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, মিন্নি এ সময় একবার সন্ত্রাসী নয়নকে, আরেকবার নয়নের সহযোগী দুর্বৃত্ত রিফাত ফরাজীকে আটকানোর চেষ্টা করেন এবং ‘বাঁচাও, বাঁচাও, না না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু, ততক্ষণে রামদার কোপে মারাত্মক আহত হন রিফাত। এরপর তাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকালে রিফাত শরীফ মারা যান।