মুখে কালো কাপড় বেঁধে দুদক গেটে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ

দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বিক্ষোভদুই সাংবাদিককে আপত্তিকর ভাষায় চিঠি দেওয়ার প্রতিবাদে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যালয়ের সামনে তৃতীয় দিনের মতো প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা। এসময় তাদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা ছিল। অবিলম্বে ওই চিঠি প্রত্যাহার না করলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে।

রবিবার (৩০ জুন) বেলা ১১টায় দুদক কার্যালয়ের প্রধান গেটের সামনে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেন ক্র্যাব সদস্যরা ও অন্যান্য সংঠনের সাংবাদিক নেতারা।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি আবু জাফর সূর্য বলেন, ‘পরিচালক অত্যন্ত সচেতনভাবে গণমাধ্যমকে দুদকের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন। দুদকের সুনাম ক্ষুণ্নের চেষ্টা করেছেন। আপনারা যদি গণমাধ্যমকে দুদক থেকে সরিয়ে দিতে চান, রাষ্ট্র অচল হয়ে যাবে। আপনারা নিজেরা পরিশুদ্ধ হোন। তা না হলে প্রতিষ্ঠনটির প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হবে। চিঠির আপত্তিকর শব্দগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যত কঠিন কর্মসূচি প্রয়োজন দেওয়া হবে। এ আগুন তাড়াতাড়ি নেভানোর চেষ্টা করুন।’

দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বিক্ষোভক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাওয়ার এটি কোনও নমুনা হতে পারে না। সাক্ষী না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি, তার মানে কী? এ প্রতিষ্ঠানের ভেতরে একটি সরকারবিরোধী গ্রুপ আছে। যারা সরকারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মুখোমুখি করার পায়তাঁরা করছে।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ভুলণ্ঠিত হতে দিতে পারি না। সাধারণ মানুষ দুদকের অনেক কর্মকর্তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। এখনও সময় আছে, কর্মকর্তাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরে আসতে অনুরোধ করুন। অবিলম্বে এই চিঠি প্রত্যাহার করে দুঃখ প্রকাশ, কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে এই আন্দোলন চলবে।’

 দুদকের দেওয়া চিঠি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের চিফ রিপোর্টার উদিসা ইসলাম বলেন,  ‘দুদকের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমরা এ ধরনের ধৃষ্টতামূলক অবস্থান আশা করি না।’ সাংবাদিকদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি আরও বলেন,  ‘যে কোনও ক্রান্তিকালে সমন্বিত আন্দোলনের কোনও বিকল্প নেই।’

দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বিক্ষোভবিক্ষোভে ডিআরইউ'র সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল বারী, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দারসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা বাছিরের ঘুষ কেলেঙ্কারী নিয়ে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের জেরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার এবং প্রশিক্ষণ ও তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক ইমরান হোসেন সুমনকে দুদকে  হাজির হওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়। এছাড়াও নোটিশে দীপু সারোয়ারকে কার্যালয়ে না গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এর প্রতিবাদেই এই মানববন্ধন।