মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ৩ ভবনে অনিয়ম, বিশেষ বৈঠক ডেকেছে সংসদীয় কমিটি



মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স ভবনের বেজমেন্ট গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য লিজ নিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে গুদাম ও কম্বল তৈরির কারখানা। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ট্রাস্টের জমিতে ‘টাওয়ার-৭১’ ও ‘জয় বাংলা বাণিজ্যিক ভবন’-এর নির্মাণকাজ সময়মতো শেষ করতে পারেনি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান।
এসব ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। বুধবার (৩ জুলাই) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
কমিটি গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারাদার এবং ভবন দুটির ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের ডেকেছে। আগামী ৭ জুলাই তাদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করবে কমিটি। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের জায়গা ব্যবহারকারীদেরও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্স ভবনে আমরা বেশকিছু অনিয়ম পেয়েছি। সেখানের গাড়ি পার্কিং লিজ নিয়ে অবৈধ স্থাপনা করে গুদাম হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের দুটি বহুতল ভবনেরও নির্মাণকাজ সময়মতো শেষ করা হয়নি। ভবন দুটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলে জরিমানা দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা ভবনও হস্তান্তর করছে না, জরিমানার টাকাও দিচ্ছে না। এসব বিষয় নিয়ে আমরা তাদের ডেকেছি।’
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের অনাদায়ী বকেয়া টাকা আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেছে।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের ওই ভবনের ইজারা ১২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের ‘টাওয়ার-৭১’ ভবনের কাজ ২০১৬ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। বিভিন্ন সময়ে জরিমানা করাসহ প্রকল্পের কাজ গত ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। যদিও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মদিনা ডেভেলপমেন্টস এখনও ভবন পর্যন্ত বুঝিয়ে দেয়নি। ৩ দফা চিঠি দেওয়ার পরও জরিমানার ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেনি।
অন্যদিকে আগ্রাবাদের ‘জয়বাংলা বাণিজ্যিক ভবন’-এর কাজ দেরি হওয়ায় গত জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। ওডিএল-এমআরএম-ইসি-জেভি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে ১৬ লাখ ২৫ টাকা জরিমানাও করা হয়। সেই টাকা এখনও দেয়নি তারা।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে গুলিস্তান শপিং কমপ্লেক্সের বেজমেন্টের লিজ বাতিল করে সেখানে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের পেছনের জায়গা সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের লক্ষ্যে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
শাহাজান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মইন উদ্দীন খান বাদল, রাজি উদ্দিন আহমেদ, কাজী ফিরোজ রশীদ ও ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল অংশ নেন।