এমপি না হয়েও বিশেষ বিবেচনায় শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা পেলেন মুহিত

আবুল মাল আবদুল মুহিত

সংসদ সদস্য না হয়েও শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা নিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনটি শর্তে সাবেক এই অর্থমন্ত্রীর আমদানি করা টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার জিপের ওপর শুল্ক কর আরোপ করেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সোমবার (১৯ আগস্ট) এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে।

আদেশে এনবিআর বলেছে, আবুল মাল আবদুল মুহিত দশম জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেননি। সে জন্য তিনি শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা প্রাপ্য না হলেও বাস্তবিক অবস্থার নিরিখে তাকে সংসদ সদস্যের মতোই শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে।

এনবিআর বলছে, দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯-এর সেকশন ২০ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২-এর ধারা ১২৬(১)-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আমদানি করা গাড়িটি খালাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সমুদয় আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক থেকে তিনটি শর্তে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।

এনবিআর`র আদেশের কপি

 শর্ত তিনটি হলো—

এক. আমদানির পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যে গাড়ি অন্যত্র হস্তান্তর বা বিক্রি করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে গাড়িটি আমদানির পাঁচ বছর পার হওয়ার আগে তা হস্তান্তর বা বিক্রি করতে হলে অব্যাহতি প্রাপ্ত সমুদয় শুল্ক কর পরিশোধ করতে হবে।

দুই. গাড়ির রেজিস্ট্রেশন হস্তান্তর বা বিক্রির ক্ষেত্রে এনবিআরের কাছ থেকে আগে সম্মতিপত্র নিতে হবে।

তিন. গাড়ি আমদানির পাঁচ বছরের মধ্যে আমদানিকারক মারা গেলে তার উত্তরাধিকারীদের কোনও শুল্ক কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে শর্ত থাকে যে, আমদানিকৃত গাড়ির মূল্য আমদানিকারকের উত্তরাধিকারীর নামে নাম পরিবর্তন ছাড়া অন্য কারও নামে হস্তান্তর বা বিক্রি করতে হলে এই প্রজ্ঞাপনের অধীনে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সমুদয় শুল্ক কর ওই গাড়ি হস্তান্তর বা বিক্রির আগে সংশ্লিষ্ট শুল্ক ভবনের কমিশনারের কাছে পরিশোধ করতে হবে।

এনবিআর বলছে, সাবেক অর্থমন্ত্রীর আমদানি করা একটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার স্টেশন ওয়াগন জিপ শুল্কমুক্ত সুবিধায় ছাড়করণের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সুপারিশ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।

সাবেক অর্থমন্ত্রীকে শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ দেওয়া প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আবেদন আগে করা ছিল। সেই আগের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তিনি গত পাঁচ বছরে মন্ত্রী থাকাকালেও শুল্কমুক্ত সুবিধা নেননি।’
এ বিষয়ে জানতে সাবেক অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।