‘ঘুষ দিতে না পারায় এমপিওভুক্ত হতে পারিনি’

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় নন-এমপিও সহকারী গ্রন্থাগারিক অ্যাসোসিয়েশনের মানববন্ধন ও সমাবেশ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এমপিও দেওয়ার নির্দেশ স্থগিত হওয়ার পরও  দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারী শিক্ষকদের এমপিও দেওয়া হচ্ছে। অথচ হাজারো সনদধারী শিক্ষক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক এমপিও বঞ্চিত রয়েছেন এই স্থগিতাদেশের কারণে।  শুধুমাত্র ক্ষমতা না থাকা আর ঘুষ না দিতে পারায় তারা এমপিওভুক্ত হতে পারেননি।’  রবিবার (২৫ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন ও সমাবেশে এই অভিযোগ করেন নন-এমপিও সহকারী গ্রন্থাগারিক অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী, সহকারী গ্রন্থাগারিক মতিউর রহমান ও মাজাহারুল ইসলাম।

এ সময় তারা দাবি করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের খামখেয়ালির খেসারত দিতে হচ্ছে হাজারো নিরীহ শিক্ষক ও সহকারী গ্রন্থাগারিককে। তারা বলেন, ‘দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারীদের এমপিওভুক্তি নিয়ে দ্বৈতনীতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দীর্ঘদিন ধরে যারা সহকারী শিক্ষক ও সহকারী গ্রন্থাগারিক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের এমপিও হচ্ছে না। অন্যদিকে যাদের ক্ষমতার জোর আছে তারা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশে এমপিও পাচ্ছেন।’

মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় গোপনে বিশেষ আদেশে এমপিও দিয়েছে। এর একপর্যায়ে বিধি মোতাবেক নিয়োগ পাওয়া সব শিক্ষক ও সহকারী গ্রন্থাগারিককে এমপিও দিতে ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট আদেশ জারি করে। কিন্তু ওই আদেশের পরের দিনই (২৯ আগস্ট) এমপিও ছাড়ের আদেশ স্থগিত করে আরেকটি আদেশ জারি করে। স্থগিতাদেশ সম্পর্কে ওই সময় সিনিয়র সচিব গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়ে এমপিও ছাড়ের আদেশ জারি করা হয়েছিল। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পক্ষে থাকলে  স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।”  কিন্তু এক বছর পার হলেও তিনি তা করেননি।’

সমাবেশে শিক্ষকরা বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত বছরের ২৮ আগস্টের এমপিওভুক্তির আদেশ দেওয়ার আগেও দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারীদের এমপিও দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে যারা বিশেষ লিখিত নির্দেশনা নিতে পেরেছেন তারা এমপিওভুক্ত হয়েছেন। আবার এমপিও আদেশটি গত বছর ২৯ আগস্ট স্থগিত করার পর যারা ঘুষ দিতে পেরেছেন তাদের এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। সিইসির (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) ভাই এমপিও স্থগিতাদেশের পর এমপিওভুক্ত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের গোপন আদেশে তা দেওয়া হয়েছে।’

সহকারী গ্রন্থাগারিকরা জানান, যেসব সহকারী গ্রন্থাগারিকের দারুল ইহসানের সনদ ছিল, নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে শর্তসাপেক্ষে তাদের এমপিও দেওয়া হয়েছে। আঞ্চলিক উপপরিচালক অফিস থেকে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদধারী কোনও কোনও শিক্ষক ও সহকারী গ্রন্থাগারিকের ফাইল অনুমোদন দিয়ে শিক্ষা অধিদফতরে পাঠানো হয়। আবার কারও ফাইল দারুল ইহসানের সনদধারী বলে বাতিল করা হয়।

সহকারী গ্রন্থাগারিকরা আরও বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই, সবাইকে এক চোখে দেখতে হবে। যাতে বঞ্চিত সবাই এমপিওভুক্ত হতে পারেন। ২০১৮ সালের ২৯ আগস্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আহ্বান জানাই। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।’

মানববন্ধন ও সমাবেশে অর্ধশতাধিক সহকারী গ্রন্থাগারিক ও শিক্ষক অংশ নেন।