বিমানবন্দরে বসছে জঙ্গিদের চেহারা শনাক্তকরণ ক্যামেরা

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্টজঙ্গি, তালিকাভুক্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও পলাতক আসামিদের বিদেশ আসা-যাওয়া ঠেকাতে হযরত শাহজলাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসছে চেহারা শনাক্তকরণ সিসি ক্যামেরা। বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের তত্ত্বাবধানে চেহারা শনাক্তকরণ ৮ সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, সেখানে অপারাধীরা আসলেই স্বয়ংক্রয় ভাবে তাদের চিহ্নিত করা যাবে। এতদিন ছবি, নাম, পাসপোর্ট নম্বর দেখে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে তাদের যাতায়াত ঠেকানো চেষ্টা হতো। কিন্তু তাতে তাদের আসা-যাওয়া ঠেকানো শতভাগ সম্ভব হতো না।   বিমানবন্দরের  একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।  

ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,  অনেকই সময় আদালত রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন। এছাড়া, সাজাপ্রাপ্ত পতালক আসামি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর  তালিকাভুক্ত অপরাধী, জঙ্গিদের বিদেশযাত্রা ঠেকাতে ছবি, নাম, ঠিকানা ও পাসপোর্ট নম্বর দেখে শনাক্ত করা হয়। তবে, এ তালিকা দীর্ঘ হলে সবসময় চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না। কখনও কখনও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ থাকলে অপরাধীদের শনাক্তে বিপাকে পড়তে হয়। অন্যদিকে, বিদেশেফেরত চিহ্নিত জঙ্গি, আসামিদের ক্ষেত্রেও একই রকম বিপত্তিতে পড়তে  হয়। সবচেয়ে বেশি জটিলতা সৃষ্টি হয় তখন, যখন কেউ পাসপোর্ট ছাড়া অন্যদেশ থেকে আউট পাসে দেশে ফেরেন। তাদের আউট পাসে ভুল বা মিথ্যে তথ্য থাকলে চিহ্নিতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এজন্য আউট পাসে আসা ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বিমানবন্দরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ কারণে বিদেশ থাকা শ্রমিকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

সূত্র জানায়, পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তি, আসামি, জঙ্গিদের দেশে প্রবেশ ও বিদেশযাত্রা ঠেকাতে  চেহারা শনাক্তকরণ সিসি ক্যামেরা ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে বিমানবন্দরে। ইমিগ্রেশনের বহির্গমন ও আগমনী অংশে এসব ক্যামেরা বসানো হয়েছে। একটি সফটওয়ারের সঙ্গে যুক্ত হবে সিসি ক্যামেরাগুলো। এই সফটওয়ারে প্রায় ৫ হাজার ব্যক্তির ছবি সংরক্ষণ করা সম্ভব। সংরক্ষিত ছবির কোনও ব্যক্তি এসব ক্যামেরার আওতায় এলেই মনিটরে সংকেত দেবে। এতে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে তালিকাভুক্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তি, আসামি বা জঙ্গিদের। চেহারা শনাক্তকরণ সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করবে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। ক্যামেরা বসানো হলেও এগুলোর কার্যক্রম এখনও শুরু হয়নি। তবে, শিগগির শুরু  হবে বলে সূত্র জানায়।

জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পাইলট প্রকল্প হিসেবে দ্রুতই চেহারা শনাক্তকরণ সিসি ক্যামেরা চালু করা হবে।’

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন্স অ্যান্ড মিডিয়া) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অনেক সময় অপরাধীরা ছদ্মবেশ ধারণ করে। এ কারণে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।’ তবে চেহারা শনাক্তকরণ ক্যামেরায় ছদ্মবেশ ধারণ করলেও শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।