সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রমতে, ৭টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন-সংক্রান্ত কমিটি গঠন, গঙ্গা ব্যারাজ ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য যৌথ কমিটি গঠন এবং আবহাওয়া পূর্বাভাস-সংক্রান্ত সহযোগিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আগামী শনিবার (৫ অক্টোবর) দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের সূচি নির্ধারিত হয়ে আছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) চার দিনের সরকারি সফরে নয়াদিল্লি যাবেন প্রধানমন্ত্রী।
অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন
গত ৮ আগস্ট দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৭টি অভিন্ন নদীর তথ্য-উপাত্ত হালনাগাদ করার বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। নদীগুলো হচ্ছে মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতি, মহুরি, ফেনি ও দুধকুমার।
এ বিষয়ে সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কমিটির সদস্যদের নাম ভারতের কাছে পাঠিয়েছি এবং তাদের নাম পাওয়া গেলে কমিটি কাজ শুরু করবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অংশের কয়েকটি অভিন্ন নদীর তথ্য ইতোমধ্যে আমরা হালনাগাদ করে ফেলেছি এবং আশা করছি ভারত তাদের প্রতিনিধিদের নাম পাঠালে তাদের অংশের তথ্য-উপাত্ত দ্রুত হালনাগাদ করা সম্ভব হবে।’ প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময়ে এ বিষয়ে ইতিবাচক একটি ফল পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গঙ্গা ব্যারাজ
গত ৮ আগস্ট ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গঙ্গা ব্যারাজ নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। তবে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত স্টাডি করার প্রয়োজনীয়তা আছে এবং এজন্য ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে একটি যৌথ টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সচিব পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ওই টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের জন্য দুই দেশ তাদের সদস্যদের নাম প্রস্তাব করবে। বাংলাদেশ তাদের নাম প্রস্তাব করেছে, কিন্তু এখনও ভারতের সদস্যদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যাল কমিটি ঠিক করবে স্টাডির পরিধি কতটুকু হবে এবং কতদিন ধরে স্টাডি করা হবে।’
বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পানি ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশে বড় কোনও জলাধার নেই বলে তিনি জানান।
‘আশা করছি প্রধানমন্ত্রীর সফরে এ বিষয়ে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে,’ বলেন তিনি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস
দুই দেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী আছে এবং ভারত বাংলাদেশকে পানি বিষয়ক পাঁচ দিনের আগাম তথ্য দিয়ে থাকে।
গত ৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ সময়ের এই মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, বাংলাদেশ সময় বাড়ানোর একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্য দিলে তা বিবেচনা করবে ভারত।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যাখ্যা ইতোমধ্যে দিয়েছি এবং ভারতের জবাবের অপেক্ষা করছি।’
তিনি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ এবং সিলেট অঞ্চলের নদীর ক্ষেত্রে পাঁচ দিনের আগাম পূর্বাভাস যথেষ্ট নয় এবং সে কারণে আমরা পূর্বাভাসের সময়ের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বলেছি।’ এটি করলে ভারতের কোনও সমস্যা নেই বলে জানান তিনি।