মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার সিশেলসের রাজধানী ভিক্টোরিয়াতে বাংলাদেশি জনশক্তি পাঠানোর বিষয়ে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং সিশেলস সরকারের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন সিশেলস-এর এমপ্লয়মেন্ট, ইমিগ্রেশন ও সিভিল স্ট্যাটাস মন্ত্রী মিজ মারিয়াম তেলেমাক।
সূত্র আরও জানায়, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে সিশেলস সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। এরপর উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হ্রাসসহ একটি সুশৃঙ্খল ও কাঠামোবদ্ধ প্রক্রিয়ায় সিশেলসে কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে উভয় দেশ শ্রম সহায়তা চুক্তিতে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মার্চে সিশেলস সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের টেকনিক্যাল সভাও অনুষ্ঠিত হয়। এরপর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় জনশক্তি পাঠনোর বিষয়ে এগ্রিমেন্ট অব লেবার কোঅপারেশন (এএলসি) খসড়া চূড়ান্ত করে। এএলসি চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী সে দেশে গিয়ে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সিশেলসে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. ফজলুল করিম, উপসচিব মোহাম্মদ শাহীন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (কর্মসংস্থান) ডিএম আতিকুর রহমান প্রমুখ।
সিশেলসে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছে। অধিকাংশ বাংলাদেশি কর্মী দেশটির নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া হোটেল, ট্যুরিজম, ফিশিং ও ফিশ ইন্ডাস্ট্রিজ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা, হাউজকিপিং, কুক, ভিলা এটেনডেন্ট, কৃষি খামার, পোল্ট্রি খামার প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশি কর্মীরা কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, সিশেলসে তিনটি ক্যাটাগরিতে বিদেশি কর্মীর চাহিদা আছে। প্রথম ক্যাটাগরিতে আছে পর্যটন, নির্মাণ, কৃষি, উৎপাদন, মৎস্য, আর্থিক সেবা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে বাণিজ্য ও বয়স্কদের সেবা খাত এবং তৃতীয় ক্যাটাগরিতে রয়েছে গৃহকর্মী। কর্মী নিয়োগে দেশটির নীতিমালা বলছে, একজন বিদেশি কর্মী একটি পদে সর্বোচ্চ ৬ বছর কাজ করতে পারবেন। তবে সে দেশের শ্রমবাজারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার মেয়াদ বাড়াতে পারবে।