বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বক্তব্য রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ না জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার (১৩ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকের পর তিনি এ কথা জানান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় পতাকার নির্দিষ্ট মাপ ও অন্যান্য বিষয় রয়েছে। জাতীয় পতাকার নির্দিষ্ট মাপ ছাড়া কোনও পতাকা ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া, মলিন, ছেঁড়া, রঙ চটা পতাকা উত্তোলন করা যাবে না। শুধুমাত্র ১৬ ডিসেম্বর যেকেউ পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন। পরদিন পতাকা নামিয়ে ফেলতে হবে।’

দীর্ঘদিন ধরে অনেকেই পতাকা উত্তোলন করে থাকেন বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে না। এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

বিজয় দিবসে রাজধানীসহ সারাদেশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিকদের বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্মৃতিসৌধে আনা-নেওয়া করা হবে। অপ্রীতিকর ঘটনা ও পরিস্থিতি এড়াতে সাভার থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকাটিও সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। যেন কোনও নাশকতা কেউ ঘটাতে না পারে। ঢাকা থেকে সাভার পর্যন্ত কোনও তোরণ করতে দেবো না।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালির আয়োজন করে। এসব অনুষ্ঠানের সাত দিন আগেই সংশ্লিষ্ট থানা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করতে হবে। সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেওয়া হবে। ৪১১টি স্থানে ফায়ার সার্ভিস অ্যালার্ট থাকবে। স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিক্যাল টিম, অ্যাম্বুলেন্স থাকবে স্মৃতিসৌধসহ গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায়।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিজয় দিবসের র‌্যালি, প্যারেডসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য বিভিন্ন স্থানে এলইডি স্ক্রিন বসানো হবে, যেন সাধারণ মানুষ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে কিছুদিন আগে থেকেই মানুষ আলোকসজ্জা করে থাকে। কিন্তু শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকাসহ সারাদেশে কোথাও কোনও আলোকসজ্জা করা যাবে না।’

সড়কপথে যান চলাচল সচল রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে পুলিশের আইজিসহ আইনশৃঙ্খলা বহিনীর প্রধান ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিজয় দিবসে জেলখানা, হাসপাতাল, এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।