শিগগির মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলবে: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী

 

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার শিগগির খুলে যাবে বলে আশ  করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমবাজার খোলার পর বাংলাদেশের কর্মীরা যৌক্তিক ব্যয়ে, স্বচ্ছ, নিরাপদ ও নৈতিক প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য মালয়েশিয়ায় যেতে পারবেন।’

রেমিটেন্স প্রবাহকে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এই প্রবাহ অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান শ্রমবাজারকে টিকিয়ে রাখতে হবে। একইসঙ্গে জরুরি নতুন শ্রমবাজার খোঁজা এবং বিদেশে অবস্থানরত কর্মীদের সর্বাত্মক কল্যাণ নিশ্চিত করা। আমরা বিদেশগামী কর্মীদের সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করতে চাই।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শ্রমবাজার নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য আসছে। ২০১৬ সালে জি-টু-জি প্লাস ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হয়। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত ২ লাখ ৯০ হাজার কর্মী পাঠানো হয়। মালয়েশিয়ার কর্তৃক নিযুক্ত বাংলাদেশি ১০টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব কর্মী পাঠানো হয়। মালয়েশিয়া ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ প্রক্রিয়ায় কর্মী নেওয়া বন্ধ ঘোষণা করে।’

শ্রমবাজার খোলার জন্য সরকার বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘৬ নভেম্বর আমি মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করি। একই বিষয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ও সরকারি জোটের প্রধান আনোয়ার ইব্রাহীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। এসব বৈঠকে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় উভয় দেশ অনৈতিক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে। এ বিষয়ে কারও কাছে কোনও ধরনের অপতৎপরতার তথ্য থাকলে তা আমাকে জানাতে পারেন। কেউ যেনও ধারণা নির্ভর তথ্য বা মন্তব্য দিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি না ছড়ায়। এতে বিদেশের কাছে ভুল বার্তা যায়, যার মাধ্যমে দেশের শ্রমবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লাভবান হয় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদেশে যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকেরা।’

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে এখন পর্যন্ত ১৬৪টি রিক্রুটিং এজেন্সির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। একই কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। বিদেশে পাঠানো নারী কর্মীদের উপযুক্ত সুরক্ষা প্রদানে ব্যর্থতা এবং চুক্তি অনুযায়ী কর্মীদের কাজ ও বেতন–ভাতা না দেওয়ার কারণে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বৈধভাবে বিদেশে গিয়েও প্রক্রিয়াগত কারণে অনিয়মিত হয়ে পড়ছে। মালয়েশিয়া সরকারের রি–হিয়ারিং পদ্ধতিতে তাদের অনেককে নিয়মিত করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে রি–হিয়ারিংয়ের আবেদন এবং নির্ধারিত ফি পরিশোধ করার পরও মালয়েশিয়ার এক ধরনের ভেন্ডরের অসহযোগিতায় অনেকে রি–হিয়ারিংয়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক সভায় আলোচনা হয়েছে।’ তিনি জানান, মালয়েশিয়া সরকার ইতোমধ্যে অনিয়মিত শ্রমিকদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যাক ফর গুড নামে একটি ব্যবস্থা চালু করেছে। যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চালু থাকবে।