অপরাধী যেই হোক, শাস্তি পেতেই হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনান্যায়বিচার ও মানবাধিকার নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মানুষের অধিকার নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন কাজ করে গেছেন। সেই ধারাবাহিকতা রক্ষায় আমাদের সরকারও মানবাধিকারের বিষয়ে সোচ্চার রয়েছে। আমরা যেকোনও অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ জানাই। ন্যায়বিচার নিশ্চিতে অপরাধী যেই হোক, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। আমরা মানবাধিকার সংরক্ষণের পাশাপাশি জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধেও লড়ে যাচ্ছি।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো প্রাণের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এসেছে। বাংলার মানুষ সব ধরনের অধিকার ফিরে পাবে, তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে এমন স্বপ্ন বাস্তবায়নেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে জয়ের পর একটি বিধ্বস্ত দেশের মানুষের খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা নিশ্চিতে বঙ্গবন্ধু রাতদিন কাজ করেন। এর সুফল পেতে শুরু করেছিল জাতি। তবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের মানুষ অধিকার বঞ্চিত হতে শুরু করে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার পর ঘটনার বিচার চাইবার অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী হয়েছিল, নারীদের সম্ভ্রমহানি করেছে, মানুষকে হত্যা করেছে সেইসব অপরাধীকেও পুরস্কৃত করা হয়েছিল। রাজনীতি করার অধিকার ও সংসদে সদস্য হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল তাদের। তবে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে এসব অপরাধের বিচার শুরু হয়েছে। ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার কাজ করছে।

মানবাধিকার কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং কমিশনের দেওয়া বিভিন্ন সুপারিশ নিয়ে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমিশনের সুপারিশ আমরা মেনে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। এছাড়া বিভিন্ন দেশে শান্তি মিশনে এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সেনা সদস্যরাও কাজ করে যাচ্ছে।

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত অত্যাচারের নিন্দা জানিয়ে এবং সংকট সমাধানে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের ওপর যে বর্বর অত্যাচার চালানো হয়েছে, তা দেখে মুক্তিযুদ্ধের কথা মনে হয়েছে। আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।

মানবাধিকার নিশ্চিত এবং প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে সরকার আন্তরিক দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। তবে সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের রোল মডেল বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এখানের একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না, চিকিৎসা ছাড়া মানুষ মরবে না। আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলে সব ধরনের অধিকার নিশ্চিতের কথা বলেন তিনি।