নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে ৮ দফা সুপারিশ স্যাপের

ইনসিডিন বাংলাদেশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তারাদক্ষিণ এশিয়ার ক্রমবর্ধমান বৈষম্য ও অসমতা দূরীকরণে আট দফা সুপারিশ পেশ করেছে সাউথ এশিয়া অ্যালায়েন্স ফর পোভার্টি ইরাডিকেশন (স্যাপে)। শনিবার ১৮ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরেন ইনসিডিন বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক মুসতাক আলী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুসতাক আলী বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ায় লিঙ্গভিত্তিক মজুরির পার্থক্য সবচেয়ে বেশি। এখানে লিঙ্গভিত্তিক শ্রমে নিযুক্তদের মধ্যেও অনেক পার্থক্য।  যা দিন দিন বেড়েই চলছে। আইএলও-এর ‘ওমেন এট ওয়ার্ক: ট্রেন্ডস ২০১৬’ প্রতিবেদন অনুসারে বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে নারীদের অংশগ্রহণের হার ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশে কমে এসেছে। পুরুষের চেয়ে নারীরা ২৪ শতাংশ কম মজুরি পেয়ে থাকেন। দক্ষিণ এশিয়ায় সন্তানের মা হয়েছেন এমন নারীরা পুরুষের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম এবং সন্তানের মা নন এমন নারীরা পুরুষের চেয়ে ১৪ শতাংশ কম মজুরি পেয়ে থাকেন। স্বল্প সংখ্যক ক্ষমতাবানের হাতে সম্পদ ও ক্ষমতা কুক্ষিগত হওয়ায় এ ধরনের বৈষম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে।’

এ ধরনের বৈষম্য মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আট  দফা সুপারিশ তুলে ধরেন মুসতাক আলী। সুপারিশগুলো হলো—ধনী ও দরিদ্রের ব্যবধান কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করা, যা নারীদের জন্য বৈষম্য ও শোষণমূলক নয়; দেশীয় কর রাজস্ব সচল করে ধনী ও কোম্পানির প্রতি অন্যায্য কর ছাড় বন্ধ করা; জনসাস্থ, শিক্ষা, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন পুনর্জীবিত করার জন্য বিনিয়োগ করা; শ্রমিক অধিকারগুলো  অর্থনৈতিক মডেলের ভিত্তিরূপে স্থাপন করা; ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে জলবায়ু বিপর্যয় রোধ ও জীবননাশী জ্বালানির অযৌক্তিক প্রভাব দূর করা; নারী ও ক্ষুদ্র কৃষকের ক্ষমতায়নে নিশ্চিতকরা; বৈষম্যের পরিবেশের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার ও সুশীল সমাজের মুক্তচিন্তার স্থান নিশ্চিত করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এমএম আকাশ, বিএনপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, বাংলাদেশ ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ড. রশিদ-ই-মাহবুব প্রমুখ।