রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করবে জাতিসংঘ: আইনমন্ত্রী

 

অ্যাডভোকেট আনিসুল হক

রোহিঙ্গাদের মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার মিয়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে জাতিসংঘ— বাংলাদেশ এমনটাই আশা করছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) তৃতীয় ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর) এর বাস্তবায়ন বিষয়ক প্রথম কর্মশালায় একথা বলেন তিনি।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। আশা করি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিজে) সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের একটি টেকসই এবং  গ্রহণযোগ্য সমাধান খুজে বের করতে সাহায্য করবে।’ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে উদ্বেগ আছে। তবে আমি বলতে চাই এটি সাইবার অপরাধ দমনের জন্য করা হয়েছে। বাক স্বাধীনতা বা সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের জন্য নয়। এখন পর্যন্ত এই উদ্দেশ্যে  আইনটি ব্যবহার করা হয়নি।’

ইউপিআরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে আমরা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। ২০১৮ সালের তৃতীয় ইউপিআরে আমাদেরকে ২৫১টি সুপারিশ প্রস্তাব করা হয়েছিল। এর মধ্যে আমরা ১৭৮ মেনে নিয়েছি। বাকি ৭৩টি অভ্যন্তরীণ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা আমাদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির প্রতিকূল থাকায় বা আমাদের সক্ষমতার অভাবের কারণে আমরা গ্রহণ করিনি।’ এই সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য মুজিব বর্ষে চারটি কর্মশালা করা হবে এবং প্রথম কর্মশালায় ৫৭টি সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য আলোচনা হবে জানান আইনমন্ত্রী। পররাষ্ট্র মন্ত্রী একেআব্দুল মোমেন বলেন, ‘বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়েছে। তাদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের সব উদ্যোগ আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা এবং সার্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।’

রোহিঙ্গা গণহত্য সংক্রান্ত গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমার মামলায় সম্প্রতি আইসিজের সিদ্ধান্ত মানবিকতার জয় বলে অভিহিত করেন তিনি। একটি দায়িত্বশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও মানবাধিকার প্রক্রিয়ার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার বিষয়ক যে নয়টি মূল আন্তর্জাতিক চুক্তি রয়েছে তারমধ্যে আটটিতে বাংলাদেশ সই করেছে।’ অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘২০২৩ সালে বাংলাদেশের চতুর্থ ইউপিআর চক্র শুরু হবে এবং তৃতীয় চক্রে ১৭৮টি সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য আগামী ২০২৩ পর্যন্ত সময় আছে বাংলাদেশের।