‘গ্রিন বাজেটে’ প্রাধান্য পাবে চার খাত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেটকে ‘গ্রিন বাজেট’ হিসেবে দেখতে চায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এজন্য খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করছে মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো সংসদীয় কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রিন বাজেটের প্রস্তাবনা তৈরি করছে। প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করতে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। সংসদীয় কমিটি ও মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, বর্তমান সরকার নিয়মিতভাবে প্রতিটি বছরের বাজেটে সুনির্দিষ্ট একটি বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বাজেটের নামও রাখা হয় সেই বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে। এর অংশ হিসেবে বাজেটকে ইতোপূর্বে ‘জেলা বাজেট’, ‘জেন্ডার বাজেট’, ‘শিশু বাজেট’ ইত্যাদি নামে আখ্যায়িত করা হয়। এর থেকেই এবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ‘গ্রিন বাজেট’-এর চিন্তা আসছে।

সংসদীয় কমিটি ও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জীববৈচিত্র্য ফান্ড গঠন, দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও বনাঞ্চল সম্প্রসারণকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালে সংসদে বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন পাস হলেও এখনও এটি কার্যকর হয়নি। ওই আইনটির ৩৬ নম্বর ধারায় জলবায়ু ফান্ডের মতো জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তহবিল গঠনের বিধান রয়েছে। মন্ত্রণালয় চাচ্ছে গ্রিন বাজেটের মাধ্যমে এই আইনটি কার্যকরের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ তহবিল গঠনের প্রস্তাবনা তৈরি করতে। তাদের মতে, তহবিল তৈরি জন্য আসন্ন বাজেটে প্রাথমিকভাবে একটা বরাদ্দ পাওয়া গেলে বিষয়টিতে যেমন গুরুত্ব দেওয়া হবে তেমনই ভবিষ্যতেও তা আরও উন্নততর হবে। এজন্য ফান্ড সৃষ্টির বিষয়টি প্রস্তাবনার মধ্যে থাকবে।

সংসদীয় কমিটি ও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্টরা বনাঞ্চল কেবল সংরক্ষণ নয় সম্প্রসারণের দিকে নজর দিতে চান। তারা জানান, সরকার বনের আয়তন বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারেও বনাঞ্চল বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। আর এটি করতে হলে বিদ্যমান বনগুলোর আয়তন বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন গাছ লাগিয়ে বনাঞ্চল বাড়াতে হবে।

এছাড়া সিটি করপোরেশনসহ শহর নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা, নদী, পানি, মাটি, বায়ুসহ পরিবেশ দূষণ বন্ধে কার্যকর ও স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে বাজেটে বরাদ্দের মাধ্যমে তারা নতুন বাজেটকে গ্রিন বাজেট হিসেবে রূপ দিতে চায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা এর আগের জেলা বাজেট, জেন্ডার বাজেটের মতো চাইছি এবারের বাজেটটি হবে ‘গ্রিন বাজেট’। এ জন্য মন্ত্রণালয় একটি প্রস্তাবনা তৈরি করছে। গ্রিন বাজেটে রূপ দিতে আমরা কী কী করতে চাই তার প্রস্তাব থাকবে এতে। আমাদের সয়সদীয় কমিটিও তাদের সঙ্গে বসে কাঠামোটা দাঁড় করাবো। । পরে এটা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। উনি প্রস্তাবনা দাঁড় করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। আর আমরা প্রস্তাব দিলেই যে এটা বাস্তবায়ন হবে বিষয়টি তা নয়। তবে, আমরা এটাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। আশাকরি ইতিবাচক কিছু হবে।