খালেদা জিয়ার প্যারোল বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে: আইনমন্ত্রী

নাগরিক সমাজ সংগঠনের জন্য প্রণীত আইন বিষয়ক ম্যানুয়াল হাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি প্রফেশনাল করতে গেলে আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে। তাই প্যারোলে মুক্তির দরখাস্ত এবং সব নিয়মকানুন মানার পরেই সরকার এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের ‘নাগরিক সমাজ সংস্থাগুলোর’ জন্য প্রণীত আইন বিষয়ক ম্যানুয়ালের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, ‘প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন আছে এবং সেখানে পরিষ্কারভাবে বলা আছে— এ পদ্ধতিতে মুক্তির জন্য কোথায়, কীভাবে দরখাস্ত করতে হবে। প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি প্রফেশনাল করতে গেলে আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে। তাই প্যারোলে মুক্তির দরখাস্ত এবং সব নিয়মকানুন মানার পরেই সরকার এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত দরখাস্ত বা এরকম কিছু পাওয়া না যাবে, ততক্ষণ হাওয়ার ওপরে কথা বলার প্রয়োজন নেই।’

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সুশীল সমাজ প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, শুধু সুশীল সমাজের অধিকারের সঙ্গে যুক্ত নয়। সুশীল সমাজ আইন ও বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে বেশি সক্রিয় হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের মধ্যে নাগরিক মনোভাব গঠন এবং তা টিকিয়ে রাখার দায়িত্বও রয়েছে এ সমাজের।’

আনিসুল হক বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সুশীল সমাজ নাগরিকদের উদ্বেগ, অগ্রাধিকার এবং সুযোগ সুবিধার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটাই স্বাভাবিক। সরকার এটিকে স্বাগত জানাবে। কিন্তু কখনও কখনও আমরা লক্ষ্য করি, বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অনেকে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের, কিংবা আন্তর্জাতিক সংগঠনের সহযোগী হিসেবে রাজনৈতিক মঞ্চে এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের বিপরীতে অবতীর্ণ হয়। যা আমাদের সুশীল সমাজের গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে পীড়া দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এসব দুর্বলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের সুশীল সমাজ জনগণের অধিকার সংরক্ষণ এবং কল্যাণ নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এটিই আমাদের সবার কাম্য। দেশ আমাদের, দেশকে নিয়ে, দেশের উন্নয়ন নিয়ে আমরা সবাই ভাববো, কথা বলবো, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো— এমন কর্মকাণ্ডই হোক আমাদের আগামী দিনের পথ ও পাথেয়।’

অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক ও সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন শারমিন খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এবং বাংলাদেশে ডিএফআইডি'র সিনিয়র গভর্নেন্স অ্যাডভাইজার ও গভর্নেন্স টিম লিডার আইসলিন বাকের।

অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচক ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম ও জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনের সদস্য আরমা দত্ত।