টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে জাতির পক্ষে শ্রদ্ধা জানালেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী

টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সমাধি সৌধের বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এসময় তিন বাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত একটি সশস্ত্র দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জাতির পিতার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন। এর আগে ৯টা ৫০ মিনিটে তিনি ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে এসে টুঙ্গিপাড়ায় হেলিপ্যাডে নামেন। এসময় তাকে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা স্বাগত জানান।

সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রবেশ করেন এবং ১০টা ১৭ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি ও পরে প্রধানমন্ত্রী সমাধি সৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ও পরে ফাতেহা পাঠ এবং বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদিতে দলীয় সভাপতি হিসেবে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করে শ্রদ্ধা জানান।

এসময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, রেহানার ছেলে রাদওয়ান সিদ্দিক ববি, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আমির হোসেন আমু, কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মতিয়া চৌধুরী, জুনাইদ আহমেদ পলক, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, শেখ হেলালউদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, শেখ সারহান নাসের তন্ময়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন, জাতীয় সংসদের চিপ হুইপ নুরে-আলম চৌধুরী, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থাপনা সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য তোরণ। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়ায় আগমন উপলক্ষে জেলাব্যাপী তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। টুঙ্গিপাড়াসহ বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পোশাকে ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এই সময়ে যেহেতু দেশে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি আছে, তাই শিশুদের ঝুঁকির বাইরে রাখতে শিশু সমাবেশ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

গণপূর্ত বিভাগ বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের শোভা বর্ধন করে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ গোপালগঞ্জের প্রবেশদ্বার থেকে টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতার সমাধি সৌধ পর্যন্ত ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থান নতুন করে সাজিয়েছে। রাস্তার পাশে  বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়ে শোভা বর্ধন করা হয়েছে।

এছাড়া মুকসুপুর মোড়, কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া মোড়, ওভার ব্রিজ, সদরের পুলিশ লাইন্স মোড়, বেদগ্রাম মোড়, ঘোনাপাড়া মোড়, টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতি মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকভাবে লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা ছাড়াও মাজার কমপ্লেক্স ও এর আশপাশের এলাকায় বর্ণিল লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে পৌর এলাকার মধ্যে রাস্তার পাশের ভবন, টিনের ঘর, বেড়া, ব্রিজ লাল-সবুজ রঙে সাজানো হয়েছে।

এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জের প্রবেশদ্বার মুকসুদপুর থেকে টুঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার রাস্তার ওপর শত শত তোরণ নির্মাণ করেছেন।