শ্রমজীবী মানুষদের দোষারোপ করলো জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

গার্মেন্টস শিল্প খুলে দেওয়ার ঘোষণার পর ঢাকামুখী জনস্রোতের জন্য শ্রমজীবী মানুষকেই দোষারোপ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। রবিবার (৫ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শ্রমজীবী মানুষের ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা এবং বাড়ি থেকে ঢাকা ফেরার নানা অসঙ্গতি তুলে ধরা হয়।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাইদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। মানবিক এই বিপর্যয়কে প্রতিহত করতে বিশ্বের সব জনগোষ্ঠীর দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন লক্ষ্য করছে করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সামাজিক দূরত্ব অপরিহার্য বিবেচনায় সর্বসাধারণকে ঘরে থাকার জন্য সরকার বিভিন্ন অনুশাসনসহ গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। কিন্তু শ্রমজীবীগণ ছুটির আমেজ নিয়ে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মাথায় না রেখে গাদাগাদি করে শহর ছাড়তে থাকেন, যা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও  বলা হয়, পরবর্তীতে সরকার সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করে। কিন্তু এই বর্ধিত ছুটির বিষয়ে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ থেকে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশে শ্রমজীবী মানুষের ঢল নামে। শনিবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ও মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের জনস্রোত সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কোনও পরোয়াই করেনি।  সরকারের যেখানে ঘরে থাকার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং তা পরিপালনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে, সেখানে এ ধরনের পরিস্থিতি কাম্য নয়। এতে করে একদিকে যেমন শ্রমজীবী এক একজন মানুষ নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন, তেমনি তার আশেপাশের লোকদেরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। এর ফলে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির প্রত্যাশিত ফলাফল  পুরোটাই এখন শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। এরকম উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পোশাক কারখানায় যোগদানকরা শ্রমিক-কর্মচারীর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি মোকাবেলায় মালিক কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সংকটকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে দায়িত্বশীল এবং মানবিক আচরণ করতে কমিশন অনুরোধ জানায়।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যেখানে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনও বিকল্প নেই, সেখানে নিজেকে ঘরবন্দি রাখার সাময়িক কষ্ট হলেও তা স্বীকার করে নিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তা অনুসরণ করার আহ্বান জানায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।