করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিতরা হোটেল সুবিধা কবে পাবেন?

করোনা পরীক্ষারাজধানীর ছয় হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ১৯টি হোটেলে রুমের সংখ্যার চাহিদা জানিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে গত ১২ এপ্রিল চিঠি দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে এখনও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর যেসব হোটেলের নাম প্রস্তাব করেছে তারা জানিয়েছে, গণমাধ্যমের মাধ্যমে তারা বিষয়টি শুনেছেন। তাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অফিসিয়ালি কোনও যোগাযোগ করেনি।

জানা গেছে, এখন পর্যন্ত শুধু সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘হোটেল অবকাশ’ ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্বাস্থ্যকর্মীদের হোটেল আবাসন চালু করার বিষয়ে জানতে গত দুই দিনে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন ধরেননি স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের জন্য ঢাকা রিজেন্সি হোটেলের ২১০টি কক্ষের চাহিদার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে হোটেলটির এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কাছে এখনও এ বিষয়ে অফিসিয়াল কোনও প্রস্তাব আসেনি। সংবাদমাধ্যমে খবর দেখে আমরা জেনেছি। আমাদের কাছে প্রস্তাব না আসা পর্যন্ত আসলে বেশি কিছু বলা সম্ভব না।করোনাভাইরাস

রবিবার (১২ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) মো. আমিনুল হাসান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দেন। চিঠিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য নির্ধারিত ছয়টি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবাদানকারী সদস্যের জন্য নির্ধারিত ১৯টি হোটেলের নামসহ প্রয়োজনীয় কক্ষের সংখ্যাসহ চাহিদার কথা উল্লেখ করা হয়।

শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে হোটেল অবকাশ, হোটেল জাকারিয়া, হোটেল রেনেসাঁ, ঢাকা রিজেন্সি, রেডিসন ব্লু, সোনারগাঁ, লেকভিউ, লা মেরিডিয়ান। লা মেরিডিয়ানের এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের কাছে অফিসিয়ালি প্রস্তাব না আসা পর্যন্ত  জানানোর কিছু নেই।

তবে এরমধ্যে হোটেল অবকাশ সরকারের প্রতিষ্ঠান পর্যটন করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। শুধু এই হোটেলটি ব্যবহার করা শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্যদিকে সারাদেশে পর্যটন করপোরেশনের অন্যান্য হোটেল-মোটেলও চিকিৎসকদের আবাসনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাস।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান রাম চন্দ্র দাস  বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,  আমাদের সব হোটেল-মোটেলে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চাইলে যেকোনও সময় ব্যবহার করতে পারবে। ইতোমধ্যে ঢাকায় পর্যটন করপোরেশনের  হোটেল অবকাশ ব্যবহার শুরু হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসক, নার্সসহ করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে সেখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন।

রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে হোটেল সাগরিকা, হোটেল গ্র্যান্ড সার্কেল ইন এবং হোটেল শালিমারের নাম। এ বিষয়ে জানতে হোটেল শালিমার ইন্টারন্যাশনালে যোগাযোগ করা হলে হোটেলটির এক প্রতিনিধি জানান, এই মুহূর্তে হোটেলের কার্যক্রম বন্ধ।

কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে উত্তরার হোটেল মেলোলিফ, হোটেল মিলিনা। মিরপুরের মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে গ্র্যান্ড প্রিন্স, হোটেল শ্যামলী, হোটেল ড্রিমল্যান্ড। মহানগর জেনারেল হাসপাতালের জন্য রাজমণি ঈশাখাঁ, ফারস হোটেল ও হোটেল ৭১।