একই দিনে পরপর দু’জনের মৃত্যু খুবই কষ্টকর: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ছবি: ফোকাস বাংলা)প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত দুই নেতাকে স্মরণ করে বলেছেন, ‘একই দিনে পরপর দু’জনের মৃত্যু খুবই কষ্টকর। আমাদের এই সংসদে বারবার শোক প্রস্তাব আনতে হচ্ছে।’ শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি দুই নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে রবিবার (১৪ জুন) সংসদে শোক প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। এর আগে সব প্রস্তাবের ওপর সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। এসময় তিনি এসব কথা বলেন।

রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে দিনের কার্য সূচিভুক্ত সব কার্যক্রম স্থগিত করে সম্পূরক কার্যসূচির অংশ হিসেবে শোক প্রস্তাব তোলা হয়। প্রস্তাবটি স্পিকার নিজেই সংসদে তোলেন। এসময় স্পিকার দুই নেতার কর্মময় জীবনী তুলে ধরেন। পরে তার ওপর আলোচনা হয়। 

দুই নেতাকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন,  ‘আমি দেশে ফেরার পর পদে পদে আমাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসময় যে দু’জনকে আমি সব সময় পাশে পেয়েছি একই দিনে তাদের হারালাম।’

মোহাম্মদ নাসিম ওয়ান ইলেভেনের সময় কারাগারে থাকা অবস্থায় স্ট্রোক করেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সময় কারাবন্দি সালমান এফ রহমানের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স সব সময় জেলগেটে তার পরিবারের পক্ষ থেকে রাখা থাকতো। ওই অ্যাম্বুলেন্সে করে মোহাম্মদ নাসিমকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় বলে তিনি সেই যাত্রায় বেঁচে যান। তবে ওই সময় তার শরীরের একপাশ প্যারালাইজড হয়ে যায়।’ 

শোক প্রস্তাবের আলোচনাকালে শেখ হাসিনা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘করোনা এমন একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে যে আমাদের দলের কেউ মারা গেলে তার পরিবারের কাছে ছুটে যাবো, একটু সান্ত্বনা দেবো, সেই সুযোগ পাচ্ছি না। আজ সংসদে আসার সময় আমাকে অনেক জায়গা থেকে সংসদে না আসতে নিষেধ করা হয়েছে।’ 

বিশ্বের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাস আক্রান্ত উন্নত-অনুন্নত দেশের সবাই ভয়ে আছেন। এই আতঙ্কটা এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেটা দুঃখজনক। তবে যে এলাকাটায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লকডাউন করছি। মানুষের জীবনযাপন যেন স্বাভাবিক থাকে সেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’

শোক প্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, শেরপুর-২ আসনের বেগম মতিয়া চৌধুরী, মুন্সীগঞ্জ -৩ আসনের মৃণাল কান্তি দাস, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের ডা. হাবিবে মিল্লাত, ঢাকা-৫ আসনের কাজী ফিরোজ রশীদ ও সাতক্ষীরা-২ আসনের মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।

পরে মরহুম দুই নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সংসদে দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। এর আগে তাদের স্মরণ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন।

চলতি সংসদের কোনও এমপি মারা গেলে সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী ওই সংসদ সদস্যকে স্মরণ করে সংসদে আলোচনা হয়। পরে বৈঠক সোমবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।