করোনাকালেও রাজনৈতিক অঙ্গনে সমান সক্রিয় তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকরোনাভাইরাসের এই সংকটকালে রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন যারা তাদের মধ্যে অন্যতম আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। এই সময়ে ঝুঁকি নিয়েও তিনি রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন তিনি। নিজের নির্বাচনি এলাকায় যাচ্ছেন। সরকারের অলিখিত মুখপাত্রের কাজ করছেন।  সংকটে গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের পাশে দাড়িয়েছেন। বিশেষ করে তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর গত দেড় বছরে ড. হাছান মাহমুদ অসংখ্য ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ গ্রহণ করে আলোচনায় এসেছেন বারবার।

সর্বশেষ ড. হাছান মাহমুদ সমাদৃত হয়েছেন করোনার সময়ে অসুবিধায় পড়া সাংবাদিকদের পাশে দাড়িয়ে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে ন্যুনতম হলেও সাংবাদিকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করেন। পাশপাশি গণমাধ্যম মালিকদের অনুরোধ করেন এ সময়ে কাউকে ছাঁটাই না করতে এবং সময়মতো বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে। আর সেটা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে গণমাধ্যমের পাওনাগুলো পরিশোধ করতে তিনি মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের কাছে চিঠিও দিয়েছেন।

তথ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি বাংলাদেশে সম্প্রচারিত বিদেশি চ্যানেলে অনুমতি ছাড়া দেশি বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধের কাজটি নিশ্চিত করেন। দেশের স্বার্থে এ সংক্রান্ত আইন প্রয়োগে দৃঢ়তার নীতি গ্রহণ করেন।

পূর্বে ক্যাবল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের বারবার বলা সত্ত্বেও টিভি চ্যানেলগুলোর ক্রম সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সাজানো হয়নি কখনোই। নেটওয়ার্ক অপারেটররা তাদের মর্জি মাফিক চ্যানেলগুলোর ক্রম ঠিক করতো এবং সামনের দিকে স্থান পাবার জন্য এমনকি কোনও এলাকায় টিভি চ্যানেল যাতে দেখা যায় সেজন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতার নানা অভিযোগ ছিল। নতুন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান প্রত্যেক জেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করিয়ে এটিকে নিয়মের মধ্যে এনেছেন। এখন ক্যাবল নেটওয়ার্কে দেশের টিভি চ্যানেল সবার আগে এবং সেগুলো তাদের সম্প্রচারের তারিখ অনুযায়ী পরপর সাজানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

এতদিন অবৈধ ডিশ টিভির দৌরাত্ম্যে  বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে নানা উপায়ে চলে যেতো। তথ্যমন্ত্রী একটি আগাম নোটিশ ও ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে এ অব্যবস্থাপনার অবসান ঘটিয়েছেন। এতে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা লোকসান রোধ করা গেছে।

ইন্টারনেটে ওয়েব সিরিজের নামে সেন্সরবিহীন অশালীন দৃশ্য ও কাহিনীর সম্প্রচার নিয়ে সম্প্রতি সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ছিল লক্ষণীয়। কুরুচিপূর্ণ এসব সম্প্রচারের প্লাটফরম যেসব মোবাইল অপারেটর দিয়েছে, তাদের কাছে ইতিমধ্যে ব্যাখ্যা চেয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

টেলিভিশনের টিআরপি নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে এদেশে অরাজকতা চলছিলো। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান এ বিষয়েও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি নিয়মতান্ত্রিক গবেষণার মাধ্যমে যাতে সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রতিফলিত হয়, সেজন্য রাষ্ট্র অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ জরিপ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এসব বিশেষ উদ্যোগ ছাড়াও দেশের সব ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার তদারকির জন্য স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সম্প্রচার আইন প্রণয়নের প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তথ্যমন্ত্রী এবিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত তাগাদা দিচ্ছেন।

ড. হাছান মাহমুদ দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ টেলিভিশন গত ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ থেকে দূরদর্শন ফ্রি ডিশের মাধ্যমে সমগ্র ভারতে সম্প্রচার চালু হয়েছে। পারস্পরিক এ সহযোগিতা বিস্তৃত হয়েছে বেতারের ক্ষেত্রেও। এ বছরের ১৪ জানুয়ারি থেকে প্রথমবারের মতো সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ বেতারের অনুষ্ঠান দৈনিক ৪ ঘন্টা সম্প্রচার ও বাংলাদেশ বেতারে আকাশবাণীর অনুষ্ঠানের অনুরূপ সম্প্রচার চালু হয়েছে।

করোনা মহামারির পুরো সময়টা জুড়ে  তিনি তার দফতরে উপস্থিত ছিলেন, এবং রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনে ছুটির দিনগুলোতে নিজ নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন অব্যাহত রেখেছেন।  

তার নিজ এলাকায় সরকারি ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি করোনা বিষয়ক চট্টগ্রাম বিভাগ সমন্বয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

এছাড়া নিয়মিত দলীয় কর্মকাণ্ড তদারকের জন্য আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে দলের কর্মকাণ্ড তদারকি ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে কাজ করে যাচ্ছেন এই নেতা।