সোমবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে তাদের উদ্যোগে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশের পর হাজার হাজার বছর আমাদের কোনও রাষ্ট্র ছিল না। অনেকেই চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতা আনতে পারেননি। বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার ভাষাও বাংলা ছিল না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙালি জাতির স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে।’
শুধু স্বাধীনতাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্রকে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ভারতের আশ্রয় থেকে ফেরা এক কোটি সম্বলহীন মানুষ, দেশের ভেতরে আরেও দুই কোটি উদ্বাস্তু মানুষ, ভগ্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা আর শূন্য বৈদেশিক রিজার্ভের দেশকে তিনি যখন সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই যারা এ দেশের অভ্যুদয় চায়নি, স্বাধীনতা চায়নি, সেই চক্র স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় তাকে সপরিবারে হত্যা করে।'
‘এই হত্যাকাণ্ড শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে নয়, এটি ছিল বাঙালি জাতির স্বাধীনতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র’, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।
১৯৭৫ সালের দিকে তাকিয়ে এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, তখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৪ শতাংশ, যা আমরা ৪০ বছর পর, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতিক্রম করেছি। সে বছর দেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল, অনেক পরিসংখ্যান মতে, সে বছর দেশে ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অগ্রগতির সেই ধারায় দেশ আজ উন্নয়নে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যেতো।'
‘বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি, কিন্তু তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে’, বলেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
প্রামাণ্যচিত্রটির নির্মাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বনেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য এক অনন্য দলিল।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিও’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবীর।