সূত্র জানায়, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) অর্থায়নে ‘এক্সটেন্ডেড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ফ্লাড (ইসিসিপি-ফ্লাড)’ নামের নতুন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে পিকেএসএফ। কাগজে কলমে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করবে পিকেএসএফ। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে দেশের কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও জামালপুর এই পাঁচ জেলার ৯০ হাজার পরিবারকে শনাক্ত করা হয়েছে যেখানে অনেকের বাড়িঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এসব পরিবারের জন্য উঁচু পাকা বাড়ি, বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য একটি করে টিউবওয়েল, কর্মসংস্থানের জন্য ছাগল পালন ও ছোটখাটো সবজি বাগান করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিকেএসএফের পরিচালক (পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন) ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমদ জানিয়েছেন, ‘চার বছর মেয়াদি প্রকল্পটি কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও জামালপুরে বন্যা মোকাবিলায় কাজ করবে। ১৩ দশমিক ৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ৯০ হাজার পরিবার এবং পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবেন। বন্যার প্রভাব, দরিদ্রতা, জীবনমান, মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বিবেচনায় আপাতত এই পাঁচ জেলাকে বাছাই করা হয়েছে। পরবর্তীতে অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে অন্যান্য জেলায়ও এ প্রকল্পটি সম্প্রসারিত হতে পারে।’
পরিবেশ অধিদফতর সূত্র জানায়, বাংলাদেশকে জলবায়ুর এই অভিঘাত মোকাবিলার জন্য জিডিপির কমপক্ষে এক শতাংশ ব্যয় করতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তন কার্যকরভাবে মোকাবিলায় অভিযোজনের পাশাপাশি প্রশমনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
প্রকল্প সম্পর্কে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ক্ষয়ক্ষতির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এই প্রকল্পটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে এক লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে। তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত টেকসইভাবে মোকাবিলায় মানুষের সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, ‘গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের (জিসিএফ) অর্থায়নে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া নতুন প্রকল্পটি উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষে অবস্থান করছে।’
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, ‘এখনও এ ধরনের কোনও প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না। তবে এ প্রকল্প বিষয়ে পিকেএসএফ’র উদ্যোগে আয়োজিত একটি কর্মশালায় আমাদের জেলা প্রশাসনের একজন এডিসি ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন। তিনি হয়তো বিষয়টি ভালো জানবেন। তবে এ ধরনের প্রকল্প এ জেলায় বাস্তবায়ন হলে জেলার সাধারণ বানভাসী মানুষই উপকৃত হবেন বলে আশা করি।’