স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানার সই করা করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যু হয় গত ১৮ মার্চ। সেদিন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ( আইইডিসিআর) এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছিলেন, মৃত ব্যক্তির বয়স ৭০ এর বেশি। দেশে মোট মৃত্যুর অর্ধেকেরও বেশি ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বন্ধ হয়ে যাওয়া বুলেটিনে এবং এর আগে হওয়া করোনা বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে ৬০ বছর বয়সী এবং যারা অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত, তাদের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে অভিহিত করা হয়। তাদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার কথাও পরিবারের অন্য সদস্যদের বলা হয়।
আর এজন্য কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটি তাদের সভায় করোনার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করেছে। কমিটি বলেছে, যেহেতু প্রথমেই হয়তো দেশের সম্পূর্ণ জনসংখ্যার জন্য ভ্যাকসিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া সম্ভব নাও হতে পারে, তাই উচ্চ ‘ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী’ বাছাই করে পর্যায়ক্রমে ভ্যাকসিন প্রদান করা যেতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা এর আগে জানিয়েছেন, বেশি বয়সে অন্যান্য রোগ থাকে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত থাকেন বেশি। ক্যানসার ও হৃদরোগসহ যারা অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত থাকেন, তাদের জন্য করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি। এ জন্য ঘরের বয়োবৃদ্ধদের প্রতি সবসময় তিনি আলাদা নজর দেওয়ার কথা বলেন।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বয়স্করা যেকোনও রোগের বেলাতেই সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ। তারা আগে থেকেই নানান জটিল রোগে আক্রান্ত থাকেন। তারা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভোগেন। যে কারণে তারা স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল থাকেন এবং সহজেই কাবু হয়ে যান।’
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতর তাদের ( ১৮ সেপ্টেম্বর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ষাটোর্ধ্ব ছাড়া এখনও পর্যন্ত মোট মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২১ জন, শতকরা হিসাবে শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছে ৪১ জন,শতকরা হিসাবে শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১২ জন, দুই দশমিক ২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৮৭ জন, পাঁচ দশমমিক ৮৮ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৩২ জন, ১২ দশমিক ৯৫ শতাংশ এবং ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন এক হাজার ৩২৮ জন, ২৭ দশমিক ২১ শতাংশ। আবার মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন দুই হাজার ৩৮২ জন; ৪৮ দশমিক ৮০ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে এক হাজার ২১ জন; ২০ দশমিক ৯২ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৩২৯ জন; ছয় দশমিক ৭৪ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ৪১৩ জন, আট দশমিক ৪৬ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ১৮৩ জন; তিন দশমিক ৭৫ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ২২০ জন; চার দশমিক ৫১ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ২৩০ জন; চার দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন ১০৩ জন; দুই দশমিক ১১ শতাংশ।
ছবি: সাজ্জাদ হোসেন