মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবিত ২৩৩ কোটি টাকার এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২২ সালের মধ্যে এসব বিওপি নির্মাণ শেষ করার কথা রয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সীমান্তে অপারেশন ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সীমান্ত নিশ্চিত করা এবং সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের সুরক্ষিত অবস্থান নিশ্চিত করতে একনেকে অনুমোদিত এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানানো হয় একনেকের বৈঠকে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সীমান্ত এলাকায় বিজিবির অপারেশনে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের জন্য উন্নত বাসস্থান নির্মাণের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য ও ব্যয় সাধ্য জ্বালানির ব্যবহার, সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সীমান্ত এলাকায় নতুন বিওপি নির্মাণ এবং পুরনো বিওপি পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে বিজিবির অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়ানোই এ প্রকল্পের উদ্দ্যেশ্য।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সুরক্ষা, বর্ডার অবজারভেশন পোস্টের (বিওপি) মাধ্যমে চোরাচালানবিরোধী অপারেশন পরিচালনা, মানবপাচার এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব হবে বলে জানানো হয়। এছাড়াও ৭৩টি বিওপি’তে দুই হাজার ২৭৬ জন সৈনিকের সুরক্ষিত বাসস্থান নিশ্চিত হবে এবং অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়বে। প্রকল্পটির আওতায় দেশের সীমান্ত পাহারায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত বিজিবি সেনাদের জন্য অধিকতর নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর আবাসন সুবিধা দেওয়াসহ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও সরঞ্জামাদির নিরাপত্তা সুরক্ষার মাধ্যমে তাদের সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন ও সেবার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।
সীমান্তের যেসব স্থানে বিওপি নির্মাণ করা হবে
খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর, সাতক্ষীরা সদর, যশোর জেলার শার্শা, কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর ও ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর সীমান্তে বিওপি নির্মাণ করা হবে। রাজশাহী বিভাগের চারঘাট, বাঘা, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট, পোরশা এবং চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট ও শিবগঞ্জ সীমান্তে বিওপি নির্মাণ করা হবে। রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড় সদর, বোদা, দিনাজপুর জেলার দিনাজপুর সদর ও বিরল, ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ ও রাণীশৈংকল, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী এবং কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি, ভুরুঙ্গামারী ও রৌমারী সীমান্তে বিওপি নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া, ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলার কসবা, চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি ও মিরেরশ্বরাই, কক্সবাজারের টেকনাফ এবং খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা ও রামগড় সীমান্তে বিওপি নির্মাণ করা হবে। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট, সিলেট জেলার জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও বড়লেখা সীমান্তেও এসব আধুনিক বিওপি নির্মাণ করা হবে।
বিজিবি’র এ প্রকল্পটি ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দবিহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, একতলা বিশিষ্ট আধুনিক বিওপি বিল্ডিংসহ রান্নাঘর এবং বাথরুমের কাজ হবে ৬৫টির। এরমধ্যে সম্পূর্ণ নতুন রয়েছে ২২টি। দুই তলা বিশিষ্ট আইসিসি ও সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হবে ৮টি, যার মধ্যে নতুন রয়েছে ২টি। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় পরিদর্শন যানবাহন, আসবাবপত্র, জেনারেটর, এল.এম.জি পোস্ট, এম.জি পোস্ট, ৩০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট অবজারভেশন পোস্ট টাওয়ার, মাটির বাঁধ, তারকাঁটার বেড়া, প্রহরী পোস্ট, টিউবওয়েল ও বৃষ্টির পানি পরিশোধন, গোলঘর, কার পার্কিং, পাকা রাস্তা, হার্ডস্ট্যান্ড প্লাগইন, সোলার প্যানেল সিস্টেম ও রিজিড পেভমেন্ট রয়েছে।