অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ

অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশঅস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ আবদুল মুহিত দেশটির ফেডারেল রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার ভ্যান ডার বেলেন-এর কাছে তার পরিচয়পত্র হস্তান্তর করেছেন। বুধবার ভিয়েনার হফবার্গ প্যালেসে (রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন এবং অফিস) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে পরিচয়পত্র পেশ করেন তিনি।  

দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে ভিয়েনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উপপ্রধান জনাব রাহাত বিন জামান উপস্থিত ছিলেন।

পরিচয়পত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানের পরে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ আবদুল মুহিত অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত বৈঠকে অংশ নেন। অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতি ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অস্ট্রিয়া সফরকালে তার সঙ্গে বৈঠকের কথা স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানান। বৈঠকে অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতি ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতি আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত ‘রূপকল্প ২০২১’ ও ‘রূপকল্প ২০৪১’, ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ, জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।

তিনি কোভিড-পরবর্তী পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে গৃহীত উদ্যোগ (যা ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে নিউইয়র্কে উন্মোচন করা হয় এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও এই উদ্যোগের একজন স্বাক্ষরকারী) গ্রহণের জন্য অস্ট্রিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রশংসা করেন। বাস্তুসংস্থান এবং জলবায়ু সংরক্ষণ বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে অস্ট্রিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে রাষ্ট্রদূত অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে গার্ড অব অনার

বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়েও আলোচনা হয়। অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতির প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান যে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ১.১ মিলিয়নের (১১ লাখ) বেশি রোহিঙ্গাকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান।

রাষ্ট্রদূত মুহিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পক্ষে অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রপতিকে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

পরিচয়পত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অস্ট্রিয়ার সামরিক বাহিনীর একটি চৌকস দল বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে সম্মানসূচক ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করে।