বনানীতে চিরনিদ্রায় শায়িত ব্যারিস্টার রফিক উল হক

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ব্যারিস্টার রফিক উল হকের জানাজাবৃষ্টিভেজা চারপাশ আর অশ্রুভেজা চোখ যেন মিলেমিশে একাকার। এমনি এক পরিবেশে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হকের তৃতীয় ও শেষ নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে তাকে বনানী কবরস্থানে তার স্ত্রী ডা. ফরিদা হকের কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জানাজায় অংশ নেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিবৃন্দ, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলবৃন্দ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসসহ সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা।সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ব্যারিস্টার রফিক উল হকের জানাজা

জানাজা শেষে রফিক উল হকের মরদেহ বনানী কবরস্থানে দাফনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। স্ত্রী ডা. ফরিদা হকের কবরের পাশে বনানীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ব্যারিস্টার রফিক উল হক।

উল্লেখ্য, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক উল হক আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান। তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।ব্যারিস্টার রফিক উল হকের প্রতি শ্রদ্ধা

ব্যারিস্টার রফিক উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার অ্যাট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন। ব্যারিস্টার রফিক উল হকের প্রতি শ্রদ্ধা

বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে আইনি লড়াই করেন তিনি। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার রফিক উল হক। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী। ব্যারিস্টার রফিক উল হক

১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক উল হক। এ সময়ে তিনি কোনও সম্মানী নেননি। পেশাগত জীবনে তিনি কখনও কোনও রাজনৈতিক দল করেননি। তবে নানা সময়ে রাজনীতিবিদরা সব সময় তাকে পাশে পেয়েছেন। ব্যারিস্টার রফিক উল হক তার জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়। 

আরও পড়ুন-

ব্যারিস্টার রফিক উল হক আর নেই

অ্যাটর্নি জেনারেল হয়েও বেতন নিতেন না রফিক উল হক

ব্যারিস্টার রফিক উল হকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

ব্যারিস্টার রফিক উল হকের মৃত্যুতে মন্ত্রীদের শোক