৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, এ প্রকল্পের আওতায় একইসঙ্গে ২০১৯ সালের বন্যা ও অতিবর্ষণে দেশের ৬ বিভাগের ২২ জেলার ১৩৯টি উপজেলা ও বন্যায় দেশের ৭ বিভাগের ২৮ জেলার ১৮২টি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। দেশের কৃষি ও অকৃষি খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতেই এসব উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের তালিকায় ছিল।
প্রকল্পের আওতায় উপজেলা সড়ক পুনর্বাসন ২ হাজার ৩৮৮ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার, ইউনিয়ন সড়ক পুনর্বাসন ২ হাজার ২৭৪ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার, গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন ১ হাজার ৫৩৪.৯৪ কিলোমিটার, আরসিসি সড়ক পুনর্বাসন ৭৮ কিলোমিটার, ২৬৮টি ব্রিজ পুনর্বাসন ও পুননির্মাণ, ২৩৯টি কালভার্ট পুনর্বাসন ও পুননির্মাণ করা হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটি কৃষি-অকৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ সার্বিক দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক অবদান রাখবে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২০ সালের ২১ মে রাতভর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে দেশের উপকূলের জনজীবন। বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রায় ২৮ ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়েছে আম্পান। অনেকগুলো জেলা ও পদ্মা পেরিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ঘরবাড়ি, ফসলের খেত, মাছের ঘের ও ফলের বাগানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। প্রাথমিক হিসাবে ঘূর্ণিঝড়ে ২৬টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। ছয় জেলায় মারা গেছে ২১ জন।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, ১৯৬০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত যে কটি ঘূর্ণিঝড়ের তথ্য রয়েছে, তাতে আম্পান সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ও বিস্তীর্ণ এলাকা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে। ঝড়ে বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ৬২ থেকে ১৫১ কিলোমিটার।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মোট ২৬টি জেলার ২০০টি ব্রিজ ও কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ চিংড়িঘেরও ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, প্রকল্পটি সময় উপযোগী। এর বাস্তবায়নে গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন হবে। কর্মসংস্থান বাড়বে।