বিজয় দিবসের যে কোনও অনুষ্ঠানে পুলিশের অনুমতি লাগবে

অন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিজয় দিবসের যেকোনও অনুষ্ঠান করতে হলে আগেই পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠান যারা করতে চান, তারা করতে পারবেন। তবে এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আগেই জানাতে হবে। কোথায় কীভাবে করা হবে, কতজনের আয়োজন, কারা কারা সেই অনুষ্ঠানে থাকবেন, সেটা আগেই জানাতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে, যাতে নিরাপত্তা বাহিনী পাশে থেকে তাদের সহযোগিতা করতে পারে।’

যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গৃহীত জাতীয় কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে যথাযথ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) আন্তঃমন্ত্রণালয় ভার্চুয়াল সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্ব আজ কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত। তারপরও বাংলাদেশের মানুষ অনেক নির্দেশনা মানছেন না। আমরা শত চেষ্টা করেও মানাতে পারছি না। সেজন্য আজকের সভায় বক্তারা আশঙ্কা করছেন এই মহান বিজয় দিবসে আনন্দর জন্য মানুষ ঘরে থাকবে না। বেরিয়ে আসবেন। তখন আমরা তাদের কীভাবে নিরাপত্তা দেবো এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে চলবে সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যেসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনার পর কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানগুলোতে যাতে নাশকতা না হয় সেজন্য দেশব্যাপী গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। তারা মন্ত্রণালয়ে মতামত দিচ্ছেন। তাদের মতামত অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করবে।’

তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী সঠিক মাপ ও রঙের জাতীয় পতাকা যথাযথভাবে তুলতে হবে। যে যেভাবে পারেন সেভাবে না উঠিয়ে অন্তত মাপটা যাতে ঠিক থাকে সে জন্য সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রীয়ভাবে ছাড়াও সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় যেসব অনুষ্ঠান হয় প্রতিবারের মতো সেটা এবারও হবে। বিভিন্ন স্থাপনায় আলোকসজ্জা হবে এবং সব সময় যেভাবে আলোকসজ্জা করা হয় সেভাবে করতে পারবেন।’

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান সফল করার জন্য ইউটিলিটি প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের ইউটিলিটি সেবা প্রদান করবেন।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে আসা-যাওয়া ও পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবছর যেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেভাবেই আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে এবং ব্যবস্থা নেবে।

বিদেশি কূটনীতিকরা যারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন তাদের জন্য যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।

সবখানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আলোকসজ্জা থাকবে। ঢাকা শহরের সব রাস্তায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ প্রতিবারের মতো সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাস্তাঘাটগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও জাতির পিতার জন্য এবং দেশ ও জাতির শান্তি ও অগ্রগতির জন্য বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা হবে।

বিজয় দিবসে কারাগার, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিস প্রতিবারের মতো দায়িত্ব পালন করবে। তারপরও অনুরোধ থাকবে সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান পালন করেন।

বিজয় দিবসের নিরাপত্তা নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।